ফের এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল জলপাইগুড়িতে। মৃতের নাম আবদুল কাশেম (৩৮)। তাঁর বাড়ি ডুয়ার্সের ক্রান্তি ফাঁড়ির অন্তর্গত চ্যাংমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পূর্ব দোলাইগাঁও গ্রামে। আত্মহত্যার জন্য নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে দায়ই করে মৃতের পরিবারের তরফে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী জানান, অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
মৃতের বাড়ির তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তির ভোটার কার্ড ও আধার কার্ডে নাম ভুল ছিল। ‘নাগরিকত্ব প্রমাণ করা’র মতো জমির কাগজপত্রও তাঁর কাছে ছিল না। গত কয়েক মাস ধরে এনআরসি সংক্রান্ত নথিপত্র জোগাড় করা নিয়ে মানসিক উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন পেশায় দিনমজুর আবদুল কাশেম। মানসিক অবসাদ তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। অবসাদগ্রস্ত হয়ে মাঝে মাঝেই এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছে তিনি জানতে চাইতেন, তাঁর কাছে উপযুক্ত কাগজপত্র নেই বলে তাঁকে ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যেতে হবে না তো?
আবদুল কাশেমের ত্রী আনসুরা বেগম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁরা সকলে মিলে টিভিতে খবর দেখছিলেন। ওই সময় টিভিতে এনআরসি সংক্রান্ত কিছু দেখাচ্ছিল। এরপর তাঁর স্বামী হঠাৎ উঠে পড়ে বলেন, ‘আমার বেঁচে থেকে লাভ নেই।’ একথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যান। অনেকক্ষণ পর বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন বাড়ির লোকজন। বাড়ির কাছে একটি গাছে তাঁকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এফআইআরে তিনি লিখেছেন, ‘আমার স্বামী এনআরসি আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছে। এর দায় নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের।’
উল্লেখ্য, এই নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলায় গত সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে আজ অবধি ৬ জন এনআরসি আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছে বলে অভিযোগ।