লোকসভার পর রাজ্যসভায়ও পাশ হয়ে গেছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। এই বিলের বিরোধীতায় সারাদেশে এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বাংলার গায়ে এই নাগরিকত্ব বিল জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি এবং নাগরিকত্ব বিল বা ক্যাব নিয়ে যা বলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ই বলবেন। শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে জেলা নেতৃত্বকে বলা হয়েছে, আপাতত যা বলার বলবেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।
গত বৃহস্পতিবার, নদিয়া জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে ওই বৈঠকে এই নির্দেশ দেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নদিয়া জেলার এক বিধায়ক ও প্রবীণ নেতা বলেন, ‘বৈঠকে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। আমাদের বলা হয়েছে, আপাতত এ নিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় যা বলছেন সেটাই অনুসরণ করতে হবে। গোটা বিষয়টা দল নজর রাখছে। সময় মতো আমরা এ বিষয়ে নির্দিষ্ট ভাবে আমাদের বক্তব্য জানিয়ে দেব।
কেন্দ্র বলছে এনআরসি সারা দেশেই হবে। গতকাল রাজ্যসভায় রাজ্যের বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের তোলা প্রশ্নের জবাবেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘এই বিল সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও লাগু হবে।’ তবে এনআরসি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী খুব জোরের সঙ্গে বলেছেন, ‘রাজ্যে এনআরসি হবে না। এ নিয়ে কোনও ভয়ের কারণ নেই।’ কিন্তু তৃণমূলের ওই নেতা বলেন, ‘এই বিবৃতির পর, আমাদের দাবি নিয়ে মানুষের মনে সংশয় স্বাভাবিক। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে তার মোকাবিলা করা সম্ভব।’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নাগরিকত্ব বিল একবার পাশ হয়ে গেলেই বিজেপি-র কৃতিত্ব দাবি করে প্রচারে যাবে। সরসরি তার বিরোধিতা করা যাবে না। রাজ্যে প্রায় ১ কোটির বেশি হিন্দু রয়েছেন, যারা দেশভাগের পর ও ‘৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পর, প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে এ দেশে এসেছেন। তাঁদের কাছে নাগরিকত্ব একটা বড় বিষয়। এই বিল পাশ হওয়ার পর, বিজেপি যে ওই উদ্বাস্তু ভোট টানতে ঝাঁপাবে সেটা জলের মত স্পষ্ট।