হায়দ্রাবাদ কাণ্ডে তোলপাড় হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জনপদ সব জায়গায় উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। অভিযুক্তদের অবিলম্বে শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এদিন সকালে পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় চার অভিযুক্তকে এনকাউন্টার করেছে হায়দ্রাবাদ পুলিশ। এই ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে দেশের বিভিন্ন মহলে। পুলিশি এনকাউন্টারে উল্লসিত আম আদমি। সাধারণ মানুষ যখন তেলেঙ্গানা পুলিশকে সাধুবাদ জানাচ্ছে, তখন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তসলিমা নাসরিন। অন্যদিকে, দোষীদের এহেন শাস্তিকে সমর্থন জানাননি অভিনেত্রী অপর্ণা সেন।
অপর্ণার কথায়, দৃষ্টান্তমূলক সাজা হল না। আইন মেনে সাজা হলেও দৃষ্টান্ত হত। গুলি করে মারা কখনও দৃষ্টান্ত নয়। পুলিশের হাতে ক্ষমতা যেতে পারে না। এনকাউন্টার যদি হবে, তাহলে পায়ে গুলি করা যেত। বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা থামাতে হবে। আরও দ্রুত ধর্ষণ মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। সরাসরি গুলি করে মেরে ফেলার ঘটনা তিনি সমর্থন করতে পারছেন না।
অন্যদিকে, তেলেঙ্গানা পুলিশের এনকাউন্টারকে সোজাসুজি বিরোধীতা না করলেও খানিক পরোক্ষভাবেই তসলিমা সওয়াল তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। লেখিকার কথায়, “বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী ও মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশি এনকাউন্টারে মারা যায়। তবে ভারতে আজ পুলিশের এনকাউন্টারে ৪ জন ধর্ষক ও খুনির মৃত্যু হয়েছে। সময়, অর্থ, শক্তি সবই বাঁচল! এক দিক থেকে ভাল, কিন্তু সত্যিই কি ভাল?” “অপরাধীদের মেরে ফেলা সোজা। কিন্তু অপরাধীদের এমনভাবে শিক্ষিত করে তোলা যাতে তারা আর কোনও দিন অপরাধই না করে, সেটা কঠিন। আমরা আসলে সোজা পদ্ধতিই পছন্দ করি”, মত তসলিমার।
অন্যদিকে, কৌশিক সেনের মতে, “এসব ক্ষেত্রে বিচার আরও ত্বরান্বিত করতে হবে। কারণ, এভাবে যদি চলতে থাকে, তবে বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে মানুষের ভরসা উঠে যাবে।”
তেলেঙ্গানা পুলিশের এনকাউন্টারকে সমর্থন জানাননি গায়ক বিশাল দাদলানিও। তাঁর কথায়, “আমরা এমন একটি সময়ে বাস করছি যেখানে বিচার ব্যবস্থার নিরঙ্কুশ ব্যর্থতাতেও ‘ন্যায়বিচার’-এর তকমা সাঁটা হয়। ঠিক তেমনই আইনি প্রক্রিয়া না মেনে পুলিশের মানুষ মারার ঘটনা কোনও দিন আপনার ক্ষেত্রেও পুনরাবৃত্তি হতে পারে।”