গত কয়েক দিন ধরেই নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে ‘বিশাল কেলেঙ্কারি’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে এটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে কংগ্রেস। ওই বন্ডকে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলেও তোপ দেগেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকাও খুঁজে পেল কংগ্রেস। তাই সংসদে আলোচনা, যৌথ সংসদীয় কমিটিকে দিয়ে তদন্তের দাবি তুলল তারা। সেই সঙ্গে এ ব্যাপারে দ্রুত রায়দানের আর্জিও তারা জানাতে চলেছে সুপ্রিম কোর্টে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনী বন্ড নিয়ে মোদীকে চার দিক থেকে ঘিরে ফেলতে চাইছে কংগ্রেস। অন্য বিরোধী দলকেও এ কাজে সঙ্গে নিতে চাইছে তারা। ইতিমধ্যেই সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে আহমেদ প্যাটেল কংগ্রেস সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, নির্বাচনী বন্ড পুরোদস্তুর দুর্নীতি। ৬ হাজার কোটি টাকার ৯৫ শতাংশ অর্থ পেয়েছে বিজেপি। আর তথ্য জানার অধিকার আইনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, নির্বাচন কমিশন, অর্থ মন্ত্রকের আপত্তি সত্ত্বেও খোদ প্রধানমন্ত্রী নিয়ম ভেঙে এর মাধ্যমে দলের টাকা পাওয়ার পথ করে দিয়েছেন। এর বিনিময়ে শিল্পপতিদের কী বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছে, সেটাই এখন তদন্তের বিষয়। সেই তদন্ত হতে পারে হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, নয়তো যৌথ সংসদীয় কমিটিতে।
এই কৌশলের পরই সংসদের দুই কক্ষে শোরগোল তোলে কংগ্রেস। তবে লোকসভায় মণীশ তিওয়ারি প্রধানমন্ত্রীর নাম নিতেই স্পিকার ওম বিড়লা তাঁর মাইক ‘বন্ধ’ করিয়ে দেন। প্রতিবাদে সভাকক্ষ ত্যাগ করে কংগ্রেস। রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় বিরোধীদের হট্টগোল থামাতে হিমশিম খেতে হয় চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে। কিছু ক্ষণের জন্য বন্ধ থাকে রাজ্যসভার টেলিভিশন সম্প্রসারণও। আবার গতকালই সংসদের অর্থ মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ছিল। কিন্তু কোনও কারণ না দেখিয়ে বৈঠক বাতিল করে দেওয়া হয়।
পরে ড্যামেজ কন্ট্রোলে সাংবাদিক বৈঠক করে মোদী সরকারের মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেন, ২০১৭-র ১ ফেব্রুয়ারি অরুণ জেটলি বন্ড আনার কথা ঘোষণা করেন। তার পর ৯-১০ মাস রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই এটি চালু হয়েছে। যাতে সৎ পথে সব টাকা আসে। তাঁর দাবি, এই বন্ডের মাধ্যমে যে কেউ নির্ভয়ে বিরোধীদেরও টাকা দিতে পারেন। কংগ্রেস জমানায় যেটি সম্ভব ছিল না। কিন্তু বন্ডের অধিকাংশ টাকা বিজেপিই পেল কেন? আর কেনই বা বিধানসভা ভোটের আগে বন্ডে টাকা নেওয়ার পথ সুগম করতে প্রধানমন্ত্রী দফতর হস্তক্ষেপ করল? পীযূষের সাফাই, বিজেপি বিশ্বের সব চেয়ে বড় দল। তাই অনেকেরই ভরসা আছে তাদের ওপর।