আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালসের বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু তিন বছর লাগাতার লাভের পরেও তা কেন বিলগ্নীকরণ করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কর্মী সংগঠনগুলি। কর্মী থেকে আধিকারিক, সকলেই ক্ষুব্ধ কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলনে নেমেছে কর্মী সংগঠনগুলি। মঙ্গলবার বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংস্থার গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের অফিসের সামনে একযোগে বিক্ষোভ দেখায় শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, লাভজনক এই সংস্থাটির বিলগ্নীকরণের সিদ্ধান্ত তারা কোনওমতেই মেনে নেবে না। এদিন কর্মীদের দাবি নিয়ে পরিচালন সমিতির সঙ্গে একটি বৈঠকে বসে শ্রমিক সংগঠনগুলি। ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ–সহ অন্যান্য শ্রমিক নেতারা।
সিটু অনুমোদিত বেঙ্গল কেমিক্যালস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহ–সভাপতি কানাই ব্যানার্জি জানিয়েছেন, আইনগত লড়াই ছাড়াও রাস্তায় নেমে একযোগে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন তারা। ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০১৬ সাল থেকে লাভের মুখ দেখতে শুরু করে বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস। সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬–১৭ আর্থিক বর্ষে লাভ হয় ৪ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা। ২০১৭–১৮ আর্থিক বর্ষে ১০ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা এবং ২০১৮–১৯ সালে লাভ হয় ২৫ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা।
১৯০১ সালে এবং এই সংস্থাই প্রথম দেশে সাপের বিষের প্রতিষেধক তৈরি করা শুরু করে। এই মুহূর্তে সাপের বিষের প্রতিষেধক তৈরি না হলেও বাজারে সংস্থার তৈরি ন্যাপথালিন, ফিনাইল, ব্লিচিং পাউডার এবং প্রসাধনী তেলের কদর যথেষ্ট। সংস্থাটি রসায়ন ও সার মন্ত্রকের অধীন। তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান এবং অরুণাচল প্রদেশের রাজ্য সরকার এই সংস্থার তৈরি উৎপাদিত পণ্য প্রতি বছর কেনে।
এই কারখানায় অফিসার ও কর্মী মিলিয়ে সংস্থার স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ২০০। চুক্তিভিত্তিক কর্মী আছেন ৫০০ জন। মোট সম্পত্তি ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সম্প্রতি সরকারি ঋণের শেষ কিস্তি ৪ কোটি টাকাও শোধ করে এই সংস্থা। মূল কারখানা পানিহাটি ও মানিকতলায় হলেও মুম্বই এবং কানপুরেও সংস্থার কারখানা আছে।