হস্টেল ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ৩ সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন দিল্লীর জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। গত সপ্তাহেই ফি বৃদ্ধি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হস্টেল কর্তৃপক্ষ। তবে তা ‘যথেষ্ট নয়’ বলে পাল্টা প্রতিক্রিয়া পড়ুয়াদের। এই ছাত্র আন্দোলনের জেরে এদিন সকালে ফের অগ্নিগর্ভ জেএনইউ চত্বর। হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার সকালে সংসদভবনের উদ্দেশে রওনা দেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বেরোতেই, বের সরাই রোডের কাছে মিছিল আটকে দেয় দিল্লী পুলিশ। দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মারধরেরও অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েক জনকে আটকও করা হয়। তার জেরে উত্তেজনা চরমে উঠেছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর এবং আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে দিল্লী পুলিশ। প্রায় ১২০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। অন্য দিকে, আজ থেকেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে। অশান্তি এড়াতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে সংসদ চত্বরেও। এদিন জেএনইউএসইউ-এর প্রাক্তন সভাপতি এন সাই বালাজির অভিযোগ জানিয়েছেন, ‘প্রতিবাদী জেএনইউ পড়ুয়াদের সংসদ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে আটকে দেওয়া হয়।’
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত তিন সপ্তাহ ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন জেএনইউয়ের পড়ুয়ারা। তার জেরে গত সপ্তাহেই খানিকটা পিছু হটেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফি বৃদ্ধি ৩০ গুণ থেকে কমিয়ে ১০ গুণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হননি পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আগের হারেই ফি নিতে হবে, যাতে সকলের পক্ষেই তা বহন করা সম্ভব হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাতে আমল দেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখতে এ দিনই তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রক।
তবে তাতেও ক্ষোভ মেটেনি পড়ুয়াদের। তাঁদের অভিযোগ, পুরোটাই লোক দেখানো। নিম্নবিত্তদের উচ্চমানের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতেই পরিকল্পিত ভাবে ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই যত ক্ষণ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পুরোপুরি প্রত্যাহার না করা হয়, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সেই মতো এ দিন সকালে সংসদভবনের উদ্দেশে রওনা দেন আন্দোলনকারীরা। তারপরেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। শান্তিপূর্ণ মিছিল করে নিজেদের বার্তা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের বাইরে পৌঁছে দেওয়া পড়ুয়াদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। গায়ের জোরে তা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমনই দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা।