অবশেষে রায়দান পর্ব শেষ হয়েছে ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার। দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ে ওই জমিতে মন্দির তৈরি করা যাবে। মসজিদের জন্য আলাদা ৫ একর জমির কথা বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের যে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায়দান পর্ব সমাপ্ত করেন। তবে এই রায়ের পর থেকেই নিজেদের মধ্যে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ চলছে অযোধ্যার সাধুদের মধ্যে। এমনকি হত্যার চক্রান্তের অভিযোগও উঠছে! মন্দিরের চাবির দখল নিয়ে শুরু এই লড়াই।
তপস্বী ছাউনির মহন্ত পরমহংস দাসের অভিযোগ, রামমন্দির তৈরির দাবিতে তিনি জেলে গিয়েছেন, আমরণ অনশনেও বসেছেন। কিন্তু এখন মন্দিরের জন্য সরকারের গড়া অছি পরিষদে (ট্রাস্ট) তাঁর শামিল হওয়া রুখতে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেছে রামমন্দির ন্যাস। পরমহংস দাসের কথায়, ‘‘আমাকে হত্যার জন্যই লোক পাঠিয়েছিলেন ন্যাসের প্রধান নিত্যগোপাল দাস। তারা এসে ভাঙচুর চালিয়েছে। বাদ রাখেনি গালিগালাজও।’’ ন্যাসের সদস্য রামবিলাস বেদান্তী পরিষদের মাথায় বসতে চান বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
ন্যাসের সদস্য বেদান্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘রামমন্দির নির্মাণের সমস্ত কৃতিত্ব একাই ঝুলিতে পুরতে চান পরমহংস। সেই কারণে আমাকে, নিত্যগোপালকে এবং যোগী আদিত্যনাথকে বদনাম করতে এই সব অপবাদ দিচ্ছেন, চক্রান্ত করছেন।’’ ঘটনার জল এত দূর গড়িয়েছে যে, তপস্বী ছাউনি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে পরমহংসকে। শোনা যাচ্ছে, এখন বারাণসীতে বসে নতুন করে ‘ঘুঁটি সাজাচ্ছেন’ তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, অযোধ্যায় রামলালা বিরাজমানের মন্দির তৈরির দায়িত্ব নিক কেন্দ্রের গঠিত ট্রাস্ট। এর পর থেকেই বিভিন্ন মঠ, আখড়া, মন্দিরে আলোচনা, কে কে থাকবেন ওই ট্রাস্টে? কার হাতে থাকবে মন্দিরের ‘চাবি’? কে তুলবেন মন্দির গড়ার টাকা? সেই টাকার সিন্দুকই বা থাকবে কার জিম্মায়? সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, মুখে এ সব কথা না বললেও মূলত এই কারণেই নিজেদের ঝগড়া লুকোতে পারছেন না সাধুরা।
ন্যাসের প্রধান নিত্যগোপাল দাসের গোড়া থেকেই দাবি, “মন্দির ন্যাসই তৈরি করুক। তা পরিচালনার দায়িত্বও দেওয়া হোক তাদের। সরকার শুধু পাশে থাকুক। গড়ুক পরিকাঠামো।” তাঁর যুক্তি, মন্দির গড়বেন ধরে নিয়েই বিতর্কিত জমির কাছে সেই ১৯৯০ সাল থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ সেরে রেখেছেন তাঁরা। মন্দিরের রাশ যাতে হাতছাড়া না-হয়, সেই কারণে তাঁরা ন্যাসের ঠিক করে রাখা নকশাতেই মন্দির তৈরির পক্ষপাতী।