বিধানসভার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর কেটে গিয়েছে দু’সপ্তাহেরও বেশি সময়। কিন্তু মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে এখনও অব্যাহত শিবসেনা-বিজেপি কাজিয়া। অন্যদিকে, শিবসেনার সঙ্গে জোট করে সরকার গড়বে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস-এনসিপিও। তবে হাতে রয়েছে মাত্র আজকের দিনটার। শনিবার রাতেই মহারাষ্ট্রে সরকারের শপথ নেওয়ার চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হচ্ছে। এরমধ্যে সরকার গঠন না হলে মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে সরকার গঠন নিয়ে কোনও ইতিবাচক অগ্রগতি তো দূরস্থান, ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ ঘিরে নজিরবিহীন বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ল বিজেপি এবং কংগ্রেস।
সমর্থনের জন্য টাকা দিয়ে বিধায়কদের কিনে নিতে পারে বিজেপি, এই ভয়েই বিধায়কদের হোটেলবন্দী করেছে শিবসেনা। দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বিধায়কদের ৫০ কোটি করে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এবার সেই একই অভিযোগ করল কংগ্রেসও। শুক্রবার মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতা বিজয় ওয়ারেত্তিয়ার জানান, কংগ্রেস বিধায়কদের দল বদলের জন্য এক একজনকে ২৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘আমাদের বিধায়কদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। দল বদলের বিনিময়ে তাঁদের ২৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। আমরা বিধায়কদের বলেছি, কল রেকর্ড করে রাখতে। রাজ্যের মানুষ সবকিছু জানুক।’
রাজনীতিকে এত নিচুস্তরে নামিয়ে আনার জন্য বিজেপি নেতৃত্বের সমালোচনাও করেন বিজয়। যদিও এই ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহারাষ্ট্র বিজেপির সভাপতি কেশব উপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘ঘোড়া কেনাবেচার কোনও প্রশ্নই নেই। এটা বিজেপির সংস্কৃতি নয়।’ যদিও এর মধ্যেই রটে যায় শিবসেনার মতোই বিধায়কদের হোটেলবন্দী করতে চলেছে কংগ্রেস। দলের একটা সূত্র জানাচ্ছে, নির্বাচিত ৪৮ জন বিধায়কের মধ্যে বেশ কয়েকজন কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গিয়েছেন। জয়পুরের কোনও হোটেলে তাঁরা থাকবেন। বাকিদের প্রথমে মুম্বইতে আসতে বলা হয়েছে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পরে তাঁদের নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের তরফে বিজয় ওয়ারেত্তিয়ার অবশ্য বিধায়কদের হোটেলবন্দী করার পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘আমরা বিধায়কদের জয়পুরে সরাচ্ছি না। এই নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে যদি কোনও বিধায়ক জয়পুর যান, তবে নিজের ইচ্ছায় গিয়েছেন। এত কঠিন নির্বাচনী ধকল কাটিয়ে কেউ কেউ অবসর বিনোদন তো চাইবেনই।’ এক সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাকি বিধায়কদের শনিবার সকালে জয়পুর পাঠানো হতে পারে। তবে অন্য একটি সূত্র অবশ্য বলছে, এখন বিধায়কদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া অর্থহীন। কারণ চলতি রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কেউ শিবির বদল করবেন না।