৮ নভেম্বর, ২০১৬। বছর তিনেক আগের এই একটি দিন, যা আজও প্রায় বেশিরভাগ দেশবাসীর কাছেই দুঃস্বপ্নের মতো। হঠাতই ওদিন সন্ধ্যায় ৭টায় দূরদর্শনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সকলেরই চোখ তখন টেলিভিশনের পর্দায়। তারপরই হল সেই বিশেষ ঘোষণা, রাত বারোটার পর থেকে গোটা দেশে বাতিল পুরোনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট। মাথায় যেন বাজ ভেঙে পড়ল দেশবাসীর। সেদিনের পর থেকে কেটে গেছে ঠিক ৩ বছর। কিন্তু বদলায়নি ছবি। এখনও আবাসন শিল্পে চাহিদার সেই ভাটা বহাল রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৩ বছর আগের সেই ৮ নভেম্বর নোটবন্দীর ঘোষণার পর এক সন্ধ্যায় অচল হয়ে গিয়েছিল বাজারে থাকা ৮৬ শতাংশ নোট। নগদের অভাবে বহু শিল্পই ধাক্কা খেয়েছিল। যার বাইরে ছিল না আবাসনও। অনেকে বলেছিলেন, এই ধাক্কা সাময়িক। আদতে নগদে লেনদেন কমার ফলে এই শিল্পে স্বচ্ছতা আসবে। দাম কমবে প্রায় ৩০ শতাংশ। বাড়বে চাহিদা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, বাস্তবে তা হয়নি। তলানিতে ঠেকা চাহিদা, অবিক্রীত ফ্ল্যাট, ঋণের বোঝা এবং নতুন পুঁজির অভাব সমস্যাই বাড়িয়েছে আবাসন শিল্পের। পুঁজির অভাবে অসম্পূর্ণ থাকা আবাসনের কাজ শেষ করতে বুধবারই ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।
বিশেষজ্ঞ সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের সমীক্ষা বলছে, এ বছরের জুন পর্যন্ত দেশের আটটি বড় শহরে সাড়ে চার লক্ষেরও বেশি ফ্ল্যাট পড়ে রয়েছে। ক্রেতা জোটেনি। নাইট ফ্র্যাঙ্কের প্রধান শিশির বৈজাল মনে করছেন, চাহিদা ও সরবরাহের অসামঞ্জস্য কাটতে এখনও দেরি আছে। নির্মাণ সংস্থাদের সংগঠন ক্রেডাইয়ের অন্যতম কর্তা হর্ষবর্ধন পাটোডিয়া বলেন, ‘নোটবন্দী ছাড়াও জিএসটি, নতুন আবাসন আইন ও পুঁজির অভাবে আবাসন শিল্প কিছুতেই সুসময়ে ফিরতে পারছে না। পরিস্থিতি বদলাতে অন্তত এক বছর লাগবে।’