মোবাইলে আসার কল রিসিভ করার পর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে নজরদারি। ব্যক্তিগত চ্যাট বা গ্রূপ চ্যাট- যাবতীয় ছবি, ভিডিও, চ্যাট রেকর্ড-সহ জরুরি নথি এক লহমায় পৌঁছে যাচ্ছে হ্যাকারদের কাছে। শুধুই ভারত নয়, আমেরিকা সহ ২০ টি দেশের উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসার ও সেনাকর্তারা হোয়াটসঅ্যাপে এরকমই নজরদারির শিকার হয়েছেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, ভারত ছাড়াও ওই নজরদারির শিকার হয়েছেন আমেরিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, বাহরিন, মেক্সিকো ও পাকিস্তানের মতো আরও কয়েকটি দেশের উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসার ও সেনাকর্তারা। ইতিমধ্যেই ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ১৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁরা হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারির শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক থেকে শুরু করে আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী এবং বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাও।
অ্যাকাউন্টে আড়ি পাতার চেষ্টা হচ্ছে বলে গত এক সপ্তাহ ধরে হোয়াটসঅ্যাপের কাছ থেকে সতর্কবার্তা পেয়েছেন তাঁরা। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ভীমা-কোরেগাঁও মামলায় কেন্দ্রের ‘শহুরে নকশাল’ তকমা দেওয়া বেশ কয়েক জনের আইনজীবী নিহাল সিংহ রাঠৌর, আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করা আইনজীবী বেলা ভাটিয়া, মানবাধিকার কর্মী ডেগ্রিপ্রসাদ চৌহান। ছত্তিশগড়ের সমাজকর্মী শালিনী গেড়া এদিন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘অক্টোবরের শুরুতে সিটিজেন ল্যাব থেকে আমায় ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। সেসময়ে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিইনি। ভেবেছিলাম ভীমা–কোরেগাঁও মামলার ব্যাপারে হয়ত কিছু।’ হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারির শিকার হয়েছেন ছত্তিশগড়ের সমাজকর্মী ডিগ্রি প্রসাদ চৌহান, লেখক এবং শিক্ষাবিদ আনন্দ তেলতুম্বদে, সাংবাদিক শুভ্রাংশু চৌধুরি।
হোয়াটসঅ্যাপের তরফে জানান হয়েছে, ভিডিও কলের সময়ে ‘পেগেসাস’ নামে একটি স্পাইওয়্যার এঁদের ফোনে বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও বা কিউ সাইবার টেকনোলজিস। সংস্থাটির বিরুদ্ধে ৭৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেছেন হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। গ্রাহকের অজান্তে ফোনে ঘাঁটি গেড়ে এই স্পাইওয়্যার তাঁর সব ব্যক্তিগত তথ্য ইজরায়েলি সংস্থাটিকে পাচার করত। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছে হোয়াটসঅ্যাপ সংস্থা।