বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই একদিকে যেমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে, তেমনি এই অবস্থায় কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে পরিকাঠামো বৃদ্ধিও। দেশের এ হেন অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে প্রথম থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। আর এ নিয়েই বহাল রয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে তাঁর বাকযুদ্ধ। বৃহস্পতিবার যা বাড়তি মাত্রা পেল রাজনের এক সাক্ষাৎকারে। সপ্তাহ দুয়েক আগে নির্মলা বলেছিলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সব থেকে খারাপ অবস্থা দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সিংহ এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসেবে রাজন একসঙ্গে কাজ করার সময়ে। যে ‘পাঁক’ আজও পরিষ্কার করতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। তবে গতকাল এক প্রশ্নের জবাবে রাজন মনে করিয়ে দিয়েছেন, মনমোহন সরকারের আমলে তিনি মাত্র আট মাস কাজ করেছেন। আর বাকি ২৬ মাস নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজন জানিয়েছিলেন, সরকার চূড়ান্ত কেন্দ্রীভূত থাকায় মোদী সরকারের প্রথম দফায় ভারতের অর্থনীতি বিশেষ ভাল করেনি। সেই মন্তব্যেরই জবাবে আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মলা বলেছিলেন, অর্থনীতির ভাল সময়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হয়েছিলেন রাজন। কিন্তু তাঁর সময়েই শুধুমাত্র অন্তরঙ্গ নেতাদের ফোনের ভিত্তিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ঋণ দিত। সেই পাঁক থেকে বার করতে এখনও ব্যাঙ্কগুলিকে পুঁজি জুগিয়ে চলেছে কেন্দ্র। গতকাল সেই প্রেক্ষিতেই রাজন মনে করিয়ে দিয়েছেন, শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসেবে মেয়াদের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি সময় তিনি কাটিয়েছেন মোদী সরকারের আমলে। তবে তিনি যে রাজনৈতিক কাজিয়ায় জড়াতে চান না, তা পরিষ্কার করে দিয়ে রাজন বলেছেন, ‘আমি রাজনৈতিক বাদানুবাদে জড়াতে চাই না। বাস্তব হল, আমরা ব্যাঙ্কের হিসেবের খাতা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেছিলাম। যা এখনও চলছে। তাড়াতাড়ি সেই কাজ শেষ করা জরুরি।’