ফুটবলের ইতিহাসে ‘হ্যান্ড অফ গড’-এর জন্মদিন আজ। ৫২ তে পা রাখলেন কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনা। তার এই ৫২ টা বছর কেটেছে বর্ণময় অধ্যায়ে। বুয়েনোস আইরেসের ভিয়া ফিয়োরিতোয় জন্য এই কিংবদন্তীর। দিনটা ৩০শে অক্টোবর, আর সাল ১৯৬০।
বহু মানবিক দোষে জর্জরিত এই মহাতারকা, সবুজ মাঠে নামলেই পালটে যেতেন। ত্রুটিপূর্ন এক সাধারণ যুবক থেকে হয়ে উঠতেন অমর শিল্পী। এখনো তার বাঁ-পায়ের ম্যাজিক টিকে আছে ভক্তদের মনে আর লাখো-কোটি ইউটিউব ভিডিওতে। সর্বকালের সেরার সম্মান, ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা তাকে দেয়নি বটে। কিন্তু ফ্যানদের ভোটে ঠিকই জিতেছিলেন এই খেতাব।
কোথায় শুরু এই জাদুর? কেমন করে তৈরী হলো মারাদোনা নামের এই গ্লোবাল ফেনোমেনা? ১৯৮৬ সালে বিশ্বমঞ্চে আবির্ভূত হন মারাদোনা। বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ড। বছর তিনেক আগে মালভিনাস যুদ্ধে পমদের কাছে হারের ক্ষত তখনও তরতাজা আর্জেন্টাইনদের বুকে। হিসেব সমান করার দায়িত্ব নিলেন অধিনায়ক মারাদোনা।
একই ম্যাচে করলেন বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বিখ্যাত দুই গোল। প্রথমটি করলেন হাত দিয়ে। পিটার শিলটনকে বোকা বানানো এই কীর্তির নাম নিজেই দিলেন হ্যান্ড অফ গড। দ্বিতীয় গোলটি ফুটবল মাঠে না হয়ে হতে পারতো, পিকাসো কিংবা দালির ক্যানভাসে। প্রায় আধডজন ইংলিশম্যানকে হতভম্ব করে গড়া মারাদোনার গোলটি যেকোনো ফুটবল পন্ডিতের কাছেই সর্বসেরা। ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে প্রায় একাই জিতিয়েছিলেন বিশ্বকাপ শিরোপা। ক্লাব ক্যারিয়ারের সেরাদিনগুলো কেটেছে বার্সেলোনা আর নাপোলিতে।
উত্থানের পাশাপাশি অতলটাও দেখলেন। নব্বইয়ের বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির কাছে হার, ড্রাগ কেলেঙ্কারীতে ফুটবল থেকে নির্বাসন। ৯৪ বিশ্বকাপে ডোপ পাপের শাস্তি…ঈশ্বরকে বানিয়ে দিলো মর্ত্যের মানুষ।
ফুটবল ছাড়ার পর ২০০৯ সালে নেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের দায়িত্ব। পরের বছর বিশ্বকাপে ভরাডুবির হলে চলে আসেন মধ্যপ্রাচ্যে। এখনও চলছে তার কোচিং অধ্যায়। বারবার তার জীবনে এসেছে নানা উত্থান-পতন। এইভাবেই তিনি কাটিয়ে দিলেন জীবনের ৫২ টি বসন্ত। তার জাদু কোনদিন ভুলবে না ফুটবলপ্রেমীরা। অমর হয়ে থাকবেন ফুটবল প্রেমীদের মনে তিনি সারাজীবন।