বিজেপির গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কথা নতুন কিছু নয়। প্রকাশ্যে যতই হম্বিতম্বি করুক গেরুয়া শিবির, অন্দরমহল যে টলমল তা বারবার প্রমাণ করে অন্দরের কোন্দল। আর সংকল্প যাত্রা ঘিরে অশান্তি তো লেগেই আছে। এবার অনুষ্ঠান মঞ্চে বিজেপি সাংসদের পাশে বসা নিয়ে হাতাহাতি চলল বিজেপি কর্মীদের মধ্যে।
গতকাল ছিল বিজেপি–র গান্ধী সঙ্কল্প যাত্রার ছিল নবম দিন। ঝাড়গ্রাম লোকসভার গড়বেতায় আমলাগোড়ায় এই যাত্রার সূচনা হয়। মঞ্চে তখন নেতাদের দাপাদাপি চলছে। ওই এলাকায় বিজেপি–র গোষ্ঠী কোন্দল থাকায় কর্মী–সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল কম। দুপুরে অনুষ্ঠানে আসেন বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। তিনি মঞ্চে উঠতেই তাঁর পাশের চেয়ারে কে বসবেন, তা নিয়ে বিজেপি নেতাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। চলে ধাক্কাধাক্কি। বিজেপি–র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কার্যকরী সভাপতি ও গড়বেতার বিজেপি নেতা প্রদীপ লোধা সাংসদের পাশের চেয়ারে বসে পড়েন। তাঁকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সেই চেয়ারের দখল নেন বিজেপি–র আরেক নেতা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সহসভাপতি ও চন্দ্রকোনা রোডের বিজেপি নেতা মদন রুইদাস। অভিযোগ, প্রদীপ লোধা মদন রুইদাসকে ঘুষি মারেন। এরপর মদনবাবুও তাঁকে পাল্টা ঘুষি মারেন। দু’জন দু’জনের পাঞ্জাবির কলার ধরে টান দেন।
মঞ্চে যখন সঞ্চালক সাংসদকে পুষ্প স্তবক দিয়ে বরণের কথা বলছেন তখন নিচে থাকা বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা মঞ্চে দুই নেতার চেয়ার দখল এবং মারামারির দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত। এই ঘটনায় সভায় হই–হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যেও গোলমাল ছড়িয়ে পড়ে। সাংসদ যুযুধান দুই পক্ষকে সামলাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তিনি নিজেই মাইক ধরে বলেন, ‘দলের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে না পারলে এমন কর্মসূচি নেবেন না। শৃঙ্খলা শিখে নেতা হয়ে মঞ্চে বসবেন।’ তিনি যে এই ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ তাও জানান। এদিনের কর্মসূচি বাতিল করে তিনি ফিরে যাবেন বলে জানাতেই অন্য নেতা–কর্মীরা তাঁকে আবেদন করেন, ‘আপনি চলে গেলে ভুল বার্তা যাবে।’ এরপর ওই দুই নেতা সাংসদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে যতই দুঃখ প্রকাশ করুন না কেন, ততক্ষণে যা হওয়ার তা হয়েই গেছে।