এনআরসি ইস্যু নিয়ে ফের তৃণমূল-বিজেপি তরজা শুরু হল। তবে এবার গোল বাঁধলো পুরসভার অন্দরে। যেখানে তৃণমূলের সঙ্গে শামিল হয়েছিল কংগ্রেসও। শুক্রবার বাংলার নাগরিকপঞ্জি প্রসঙ্গ উঠতেই রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম সাফ জানিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে বাংলায় এনআরসি হবে না।
বারবারই বিজেপির প্রায় সর্বস্তরের নেতা আসামের মতো বাংলাতেও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির মাধ্যমে ‘অনুপ্রবেশকারী’দের তাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছেন। যার জেরে রীতিমতো আতঙ্কিত আমজনতা। নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে যথাযথ নথি জোগাড় করতে না পেরে আত্মহত্যার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায়।
এদিনও পুরসভায় উঠে আসে এনআরসি প্রসঙ্গ। কংগ্রেসের কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায় প্রস্তাব পেশ করে বলেন, বাংলায় এনআরসি হলে অনেকেরই নথি জোগাড় করতে সমস্যায় পড়তে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে এর পালটা দেন বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা। তাঁর মন্তব্য, এরাজ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকরণ হবে কি না, তা সম্পূর্ণ কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত। সরকার যা চাইবে, সেটাই হবে। এখানে রাজ্য সরকারের কিছু বলার থাকবে না।
তাঁর এরূপ মন্তব্যের পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেস একজোট হয়ে বিজেপি কাউন্সিলরের বিরোধিতা করতে থাকেন। এরপরই ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যতদিন আছে, বাংলায় এনআরসি করতে দেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রী এমনটা কিছুতেই হতে দেবেন না। বিষয়টা হাউসে জানিয়ে দিচ্ছি। এখান থেকে কারও চলে যাওয়ার কোনও ভয় নেই।’
গত সোমবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের আমন্ত্রণে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে গিয়েও এনআরসি নিয়ে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জোর গলায় তিনি বলেন, ‘বাংলা থেকে কাউকে তাড়ানো যাবে না। এনআরসি হতে দেব না। সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে থাকব, শান্তিতে থাকব।’ উত্তরবঙ্গের সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলির বাসিন্দাদের অভয় দিয়ে বলেন, ‘অযথা চিন্তা করবেন না। আপনাদের নিজেদের মাটি থেকে কেউ তাড়াতে পারবে না। আমি আপনাদের পাহারাদার। আমি যতদিন আছি, আপনাদের কেউ তাড়াতে পারবে না।’