সাম্প্রতিক টানা বৃষ্টি ও নদী উপচে আসা জলে রাজ্যজুড়ে ক্ষতি হয় আমন ধান ও সব্জি চাষের। তার মধ্যে ২৯সেপ্টেম্বর থেকে ২অক্টোবর পর্যন্ত বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কৃষি ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যের ছ’টি জেলার ৪০টি ব্লকে কয়েক হাজার হেক্টর জমি জলে ডুবে যায়। চাষের এই ব্যাপক ক্ষতি সামাল দিতে রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকগুলিতে বিকল্প চাষের জন্য বীজ বিলি করার সিদ্ধান্ত নিল কৃষি দপ্তর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে দাঁড়াতে নবান্নে আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
কৃষিকাজে সহায়তার জন্য কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আর্থিক অনুদান ছাড়াও কৃষি সরঞ্জাম বিলি থেকে শস্যবিমার মাধ্যমে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে কৃষি দপ্তর। মৃত্যুকালীন চাষির পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে আর্থিক অনুদান ও চাষিদের নিশ্চিত আয়ের জন্য আর্থিক সহয়তা করে আসছে সরকার। এবার অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিনামূল্যে বীজ বিলি করার সিদ্ধান্ত কৃষক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। যা বিধানসভা ভোটের আগে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে শাসক দলকে। কৃষিমন্ত্র্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই কৃষকদের পাশে রয়েছেন। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে চাষের উন্নতি সাধন করে চলেছেন। এবারও অতিবৃষ্টি ও বন্যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকের চাষিদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে ব্রত গ্রহণ করেছেন তিনি।
রাজ্যজুড়ে কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা সরজমিনে খতিয়ে দেখে এই সমস্ত ব্লকের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব তুলে এনেছেন। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। এই ব্লকগুলির বিঘের পর বিঘে জমির চাষ নষ্ট হয়েছে। স্বভাবতই ওই সমস্ত ব্লকের চাষিদের মাথায় হাত। দুশ্চিন্তায় পুজোও তাঁরা ভালোভাবে কাটাতে পারেননি। ধান ও সব্জি নষ্ট হওয়ায় পরবর্তী চাষ নিয়েও চিন্তায় ছিলেন তাঁরা।
কৃষিমন্ত্রী জানান, চাষে ক্ষতি হয়েছে হাওড়া জেলার উদয়নারায়ণপুর ব্লক। বীরভূমের মহম্মদবাজার, লাভপুর, রামপুরহাট-১ ও ২, নলহাটি-১ ও ২, মুরারই-১ ও ২ ব্লক। মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম, ভগবানগোলা-২, রানিনগর-২, ফারাক্কা, সূতি-১ ও ২, রঘুনাথগঞ্জ-১ ও ২, সামসেরগঞ্জ, সাগরদিঘি, জলঙ্গি, ভরতপুর-১ ব্লক এবং খড়গ্রাম। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গের মালদহ জেলার রতুয়া-১ ও ২, কালিয়াচক-২ ও ৩, হরিশচন্দ্রপুর-২, ইংলিশবাজার, চাঁচোল, হবিবপুর, ওল্ড মালদহ, মানিকচক ব্লক। হুগলি জেলার তারকেশ্বর, জাঙ্গিপাড়া, পুরশুড়া, খানাকুল-১ ও ২ ব্লক। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া-১, কেতুগ্রাম-২ ব্লক।