কাশ্মীরের আপেলকেই হাতিয়ার করছেন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। কাশ্মীরের আপেল বিক্রেতারা কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলার আপেল চাষি ও আপেলের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আপেল কেনেন। সেই আপেল তাঁরা কেজি দরে বিক্রি করেন জম্মু, পাঞ্জাব, দিল্লী হরিয়ানায়। সেই আপেলগুলি সবচেয়ে বেশি কেনেন কাশ্মীর ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরা।
গত তিন-চার দিন ধরে দেখা যাচ্ছে, আপেলের বাক্স বা পেটি খুললেই তাতে নীল বা কালো রংয়ের পেন দিয়ে লেখা রয়েছে, ‘আজাদি চাই’, ‘আমি বুরহান ওয়ানিকে ভালবাসি’, ‘জাকির মুসা কাম ব্যাক’, ‘হিন্দুস্থান মুর্দাবাদ’, ‘ভারতীয় সেনা দূর হটো’-র মতো নানা কথা। কাশ্মীর ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরা তা কিনতে অস্বীকার করছেন।
ব্যবসায়ীদের একটি মহল, পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, আপেল কাণ্ডের পর টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা আবার আগের মতো পুরোপুরি স্বাভাবিক করার কথা কেন্দ্রীয় সরকারকে ভাবতে হতে পারে। কারণ আপেলের মধ্যে উসকানিমূলক বার্তা লিখে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসীরা যদি বার্তা দিতে পারে তাহলে তারা ফলের পেটিতে বিস্ফোরক বোঝাই করে নাশকতাও চালাতে পারে।
বিপদে পড়েছেন আপেলের পাইকারি বিক্রেতারা। মুসলিম বিক্রেতারাও বুঝতে পারছেন না কী করবেন। ফলে দাম দিয়ে কেনা আপেল বিক্রি হচ্ছে না। কাঠুয়া, অমৃতসর, পাঠানকোট, জম্মুর ফল বিক্রেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এ সব লেখা থাকার জন্য যাঁরা আপেল কিনতে চাইছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার কোনও পদক্ষেপ না করলে কাশ্মীরি আপেল তাঁরা বয়কট করবেন।
কাঠুয়ার পাইকারি বাজারের সভাপতি রোহিত গুপ্তার নেতৃত্বে ব্যবসায়ীরা পাকিস্তান ও জঙ্গিবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। রোহিত গুপ্তা জানিয়েছেন, “যে সব বাক্সের আপেলে ওই সব লেখা ছিল, সেগুলি কাশ্মীর থেকে এসেছে। কথাগুলি লেখা ছিল ইংরেজি ও উর্দুতে। দেশবিরোধী এই সব স্লোগান বরদাস্ত করবেন না জম্মু ও কাশ্মীরের হিন্দু এবং শিখ ব্যবসায়ীরা”।
ভারতের সংবিধান থেকে অস্থায়ী ৩৭০ ধারা ও ৩৫এ ধারা কেন্দ্রীয় সরকার বিলোপ করার পরে কাশ্মীরের টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না টানা ৭২ দিন। তারপর পোস্টপেড লাইন নামেই চালু হয়েছে, টাওয়ারের সমস্যা রয়েছে। ইন্টারনেটও নেই বললেই চলে। সাধারণ মানুষের জমায়েতও নিষিদ্ধ। তবে এই অবস্থার মধ্যেও যে জঙ্গী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সক্রিয় রয়েছে ও নানাভাবে বার্তা পাঠানোর অবিরাম চেষ্টা করে যাচ্ছে, তা স্পষ্ট বুধবারের ঘটনাতেই।