ফের নাট্যজগতে লাগলো কালো দাগ। অভিনয় শেখানোর নামে তাঁকে ‘ধর্ষণ’ করা হয়েছে বলে নাট্যব্যক্তিত্ব তথা নিজের শিক্ষকের বিরুদ্ধেই এবার ধর্ষণের অভিযোগ আনলেন এক মঞ্চ অভিনেত্রী। নিজের ফেসবুক পোস্টে প্রাক্তন অধ্যাপক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেও সংবাদমাধ্যমে নিজের নাম দিতে নারাজ ওই অভিনেত্রী। সুদীপ্তরই নাটকের দল ‘স্পেক্ট্যাক্টরস’-এ নিয়মিত অভিনয় করতেন ওই তরুণী। বুধবার রাতে ধর্ষণের সবিস্তার বিবরণ দিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন ওই তরুণী। ইতিমধ্যেই সেই পোস্টকে ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে। ওই অভিনেত্রীর সমর্থনে শুরু হয়েছে প্রচার। এমনকি দোষ-গুণ বিচার করার আগেই বসানো হয়েছে খাপ পঞ্চায়েত।
কলকাতারই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘মিডিয়া সায়েন্স’ বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন সুদীপ্ত। এই ঘটনা সামনে আসায় তাঁকে পদত্যাগও করতে হয়েছে। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ওই শিক্ষকের বাড়িতেই হত নাটকের রিহার্সাল। নাটকের মহড়ার নামে ডেকে তাঁকে ধর্ষণ করেছেন সুদীপ্ত। সেই সময়ে দলের অন্য কোনও সদস্যই সেখানে হাজির ছিলেন না। এমনকি বাড়িতে ছিলেন না সুদীপ্তর স্ত্রীও। সেই সুযোগটা নিয়েই তাঁর সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করেন নাটকের শিক্ষক।
অন্য দিকে, অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি ফেসবুক পোস্টে যা লেখা হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা এবং বিকৃতি তথ্য। তাঁর দাবি, নামভূমিকায় অভিনয়কারী ওই তরুণীর অভিনয়ে খামতি ছিল। তাই ‘ডায়াফ্রাম ব্রিদিং টেকনিক’ প্রয়োজন তাঁর অভিনয় তথা থিয়েটারের স্বার্থেই এবং তিনি নন, ওই তরুণীই তাঁর কাছে অনুরোধ করেছিলেন ত্রুটি সংশোধনের, এমনটাই দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “নাটকের প্রয়োজনে ‘ডায়াফ্রাম ব্রিদিং টেকনিক’ শিখিয়েছিলাম। ওই তরুণী নিজেই সে জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ওই ট্রেনিংয়ের জন্য আংশিক নগ্নতা বা শরীরী স্পর্শ হয়েছে। সেটাও তরুণীর ইচ্ছাতেই ঘটেছে। এখন সেটা নিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে।”
ইতিমধ্যেই এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে নিন্দার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তার ফলের অভিযুক্ত সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়কে এদিনই অধ্যাপকের চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, “ফেসবুকটা আদালত নয়, অথচ সেখানেই বিচারপর্ব চলছে।” তবে কি তিনি এবার আদালতের দ্বারস্থ হবেন? এর জবাবে সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, এখনই সেটা ঠিক হয়নি। তবে আইনজ্ঞের পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি। নিজের আইনজীবীর পরামর্শ অনুযায়ীই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তিনি।