এনআরসি ইস্যু নিয়ে এমনিতেই গোটা দেশে বিতর্ক তুঙ্গে। বাংলাতে ইতিমধ্যেই এনআরসির আতঙ্কে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যেই আরও বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। এনআরসি আতঙ্ক মুছতে মঙ্গলবার সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার জন্য দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে দলীয় কর্মীদের প্রতি তাঁর নিদান, ‘‘সাধারণ মানুষকে আপনারা বোঝান, এনআরসি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই, আপনারা শুধু মন দিয়ে বিজেপিটা করুন।” শঙ্কুর এহেন বিতর্কিত মন্তব্যকে আবার সমর্থন করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয় মঙ্গলবার। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যাওয়া রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন শঙ্কুদেব পণ্ডাও। সেখানে বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যে শঙ্কুদেবকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনারা মানুষের ঘরে ঘরে যান। মানুষকে বলুন, মানুষকে বোঝান যে, মন দিয়ে বিজেপিটা করুন। এনআরসি নিয়ে চিন্তা করার বিষয়টা আমাদের। আমরা বুঝে নেব। আপনাদের কেউ উচ্ছেদ করবে না।”
এখানেই থেমে থাকেননি শঙ্কুদেব। বিজেপি না করলে বা বিজেপির সঙ্গে না থাকলে যে এনআরসি থেকে নাম বাদ পড়তে পারে, এমন প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারির সুরও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। তিনি বলেন, ‘‘একমাত্র বিজেপিই আপনাকে সুরক্ষিত ভারতবর্ষ দিতে পারে। এক মাত্র বিজেপিই আপনাকে সুরক্ষিত বাংলা দিতে পারে। এক মাত্র বিজেপিই আপনাকে সুরক্ষিত ওয়ার্ড দিতে পারে। এক মাত্র বিজেপিই পারে আপনাকে সুরক্ষিত পরিবার এবং মাথার উপর ছাদ দিতে। তাই আপনাকে বিজেপি করতেই হবে।”
আসামে এনআরসি-র পর তা নিয়ে আশঙ্কা আর উদ্বেগ বাড়ছে এ রাজ্যে। সেই আবহেই শঙ্কুদেব পণ্ডার এমন মন্তব্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তবে তাঁকে সমর্থন করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘শঙ্কুদেব পণ্ডা ঠিকই তো বলেছেন। আমরাই তো সামলে নেব।” দিলীপ আরও বলেন, ‘‘এনআরসি এখনও হয়েছে কোথায়? এত ভয় পাওয়ারই বা কী আছে? বিজেপির উপরে আস্থা রাখুন। কারও কোনও অসুবিধা হবে না।” কিন্তু শঙ্কুদেবের এহেন মন্তব্যে বিতর্ক আরও বেড়েছে।