বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি, তেমন চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে। গাড়ি শিল্প থেকে বিস্কুট- সর্বত্রই বাজারে চাহিদা বাড়ন্ত। বিক্রি না হওয়ায় বন্ধ করতে হচ্ছে উৎপাদন। গত ছ’বছরের বিচারে তলানি ছুঁয়েছে বৃদ্ধি। এই পরিস্থিতিতেও যখন সঙ্কট মানতে নারাজ কেন্দ্র, ঠিক সেসময়ই শুক্রবার অর্থনীতিতে আছড়ে পড়ল জোড়া উল্কা। এক দিকে, আর্থিক সঙ্কটের মেঘ কতটা ঘনিয়েছে সেটা ফের স্পষ্ট করে সরকারি পরিসংখ্যান জানাল, চলতি বছর আগস্টে শিল্পোৎপাদন গত বছর আগস্টের তুলনায় ১.১ শতাংশ কম হয়েছে। যা সাত বছরে সবচেয়ে খারাপ।
অন্যদিকে, আরও মন্দার চোটে আরও বসে গেছে গাড়ি শিল্পের চাকা। গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়ামের হিসেব, গত বছর সেপ্টেম্বরের তুলনায় এই সেপ্টেম্বরে ফের কমেছে যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি। এই নিয়ে টানা ১১ মাস। শুক্রবার প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যাত্রাবাহী গাড়ি বিক্রি কমে দাঁড়িয়েছে ২৩.৭ শতাংশে। আর ছোট গাড়ি বিক্রি কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩.৪ শতাংশে। দু’চাকায় ধাক্কা দু’দশকে সর্বোচ্চ, ২৩.২৯ শতাংশ। সিয়ামের তরফ থেকে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে যাত্রিবাহী গাড়ি বিক্রি হয়েছে ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৩১৭টি এবং ছোট গাড়ি বিক্রি হয়েছে ১ লক্ষ ৩১ হাজার ২৮১টি। আর এর ফলে যে আরও খারাপ হতে চলেছে গাড়ি শিল্পের অবস্থা, তা বলাই বাহুল্য।
এর পাশাপাশি আবার ঘাটতি দেখা দিয়েছে জিএসটি সংগ্রহেও। ২০১৭ সালে বর্ধিত জিএসটি কার্যকর হওয়ার পর থেকে সরকারি কোষাগারের চাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে ছিল জিএসটি সংগ্রহের ফলে। গত ১৯ মাসের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সবচেয়ে কম জিএসটি সংগ্রহ করেছে কেন্দ্র সরকার। আর এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে সরকারের নতুন রিপোর্টে। গত মাসে জিএসটি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ৯১,৯১৬ কোটি। তার মধ্যে সিজিএসটি ১৬,৬৩০ কোটি, এসজিএসটি ২২,৫৯৮ কোটি এবং আইজিএসটি ৪৫,০৬৯ কোটি টাকা। যা গত ১৯ মাসে সবচেয়ে কম। গত বছর ঠিক এই সময়ে জিএসটি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল ৯৪,৪৪২ কোটি। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় জিএসটি সংগ্রহ প্রায় ২.৮ শতাংশ কমে গিয়ে গত বছরের তুলনায়। শুধু তাই নয়, রপ্তানি ওপর ধার্য করা জিএসটি থেকে যা আয় হয়, তার পরিমানও অনেকটাই কমেছে।