আম জনতা এবং প্রশাসনের যৌথ প্রয়াসে পুজোর পরীক্ষায় ফুল মার্কস পেল কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য। পুজোর দিনগুলো দেখিয়ে দিল বাংলার মাটি শান্তিতেই বিশ্বাসী। কলকাতা তো বটেই গোটা রাজ্যেই দুর্গোৎসব কেটেছে নির্বিঘ্ন-সম্প্রীতিতে। পুজোর শহরে জনস্রোত, দোসর ছিল বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। তার থেকেও বড় মাথাব্যথা ছিল উত্তরে টালা, দক্ষিণে মাঝেরহাটের মতো শহরের দু’টো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেতু বন্ধ থাকা। এ বার দুর্গাপুজোয় তাই শহর সচল রাখাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কলকাতা পুলিশের কাছে। পুজোর চার দিন সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা বলছে, সেই চ্যালেঞ্জ সামলে শহরের রাস্তা মসৃণ রাখতে ফুল মার্কস পেয়েছে লালবাজার।
পুজোর আগে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বার বার শহরের ট্র্যাফিক সচল রাখার বার্তাই দিয়েছিলেন সিপি। পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে বিজয়ার শুভেচ্ছাবার্তায় সামগ্রিক পারফরম্যান্সের প্রশংসাই করেছেন নগরপাল। বাহিনীর উদ্দেশে অনুজ শর্মা বলেছেন, ‘এ বছরের পুজোয় পুলিশি আয়োজনের একটা উল্লেখযোগ্য দিক হল, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বের সঙ্গে ট্র্যাফিক পুলিশের আদর্শ সমন্বয়। আমি এখানে যোগ দেওয়া ইস্তক এ ব্যাপারেই জোর দিয়ে আসছিলাম।’ বাহিনীর সদস্যরা যে ভাবে দিন-রাত এক করে ডিউটি করেছেন, সে জন্য প্রত্যেককে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
সামাজিক বা গোষ্ঠী-সংঘাত জনিত কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি পুলিশ প্রশাসনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। ভিড় সামলানো থেকে যান-শাসন, পুলিশের ভূমিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ আম জনতা থেকে নেতানেত্রীরাও। সর্বোপরি সাধারণ মানুষও প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করে উৎসবে মেতেছে। বোধন থেকে বিসর্জন— মহামিলনের উৎসবে শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসী, সমস্ত পুজো কমিটি, এবং পুলিশকে বিশেষ ভাবে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে চিঠি লিখে পুজোয় পুলিশের কাজের তারিফ করেছেন। প্রত্যেক পুলিশকর্মীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ মানুষও পুলিশের কাজে সন্তুষ্ট বলে ওই চিঠিতে লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ফেসবুক পোস্টেও রাজ্যবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কৃতিত্ব হিসেবে প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মমতা। পুজোর আগেই মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী এবং দলীয় বিধায়ক, সাংসদ এবং নেতাদের বলে দিয়েছিলেন, পুজোর ক’দিন চোখ কান খোলা রাখতে হবে। মুখ্যসচিবও ভিডিয়ো কনফারেন্স করে প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছিলেন, ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এলাকা না ছাড়তে। ছুটিতেও বাড়ি বসে ঘটনা-দুর্ঘটনা, আপদ-বিপদের খবর রাখতে হবে। অনেকেই বলছেন, সেই সতর্কবার্তা কাজে দিয়েছে।