স্কুলপড়ুয়াদের ফুটবল ম্যাচ চলছে মাঠ জুড়ে। স্কুলের ছাত্রীরাই চিয়ারলিডার। লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিচ্ছে তারা। আর তাদের পাশেই চুপটি করে দাঁড়িয়ে আর এক ছাত্রী। ঘটনাস্থল ফ্লোরিডার একটি হাইস্কুল। হঠাৎ শান্ত ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির দিকে এগিয়ে আসল এক ছাত্র। সে ছাত্রের হাতে দু’টো বেলুন, ফুলের তোড়া আর অন্য হাতে একটা প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, ‘উইল ইউ বি মাই সানশাইন টু হোমকামিং?’ ছেলেটিকে এগিয়ে আসতে দেখেই দৌড়ে গেল মেয়েটি। পরস্পরকে জড়িয়ে ধরল তারা। ততক্ষণে হাততালি আর চিৎকারে ভরে গিয়েছে মাঠ।
আর পাঁচটা প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনা তো এটা নয়? এ গল্প সারিস মেরি গার্সিয়া আর ডেভিড কোয়ানের গল্প। ফ্লোরিডার একটি হাইস্কুলের পড়ুয়া তারা। তারা দু’জনেই ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত। তাদের প্রেম নিবেদনের ভিডিও ভাইরাল হতেই তা মন জয় করে নিয়েছে নেট-দুনিয়ার।
ভিডিওয় দেখা যায়, পরস্পরের কাছে আসার পরে হাঁটু মুড়ে বসে সারিসকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় ডেভিড। সারিসও তা গ্রহণ করে। অভিনন্দন আর প্রশংসার বন্যায় ভেসে গেছে সদ্য প্রেমিক-প্রেমিকার এই অসম্ভব মিষ্টি জুটি। আবেগে ভেসে গিয়েছেন নেটিজেনরা। সারিস মেরি গার্সিয়া আর ডেভিড কোয়ান-ও এক ডিসঅর্ডারের শিকার। কিন্তু তাতে যে তাদের জীবনে বা যাপনে আনন্দের কোনও কমতি নেই। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত হলেও যে স্বাভাবিক জীবন বাঁচা সম্ভব, সেই কথাই জানাতে চেয়েছেন তারা।
চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, সাধারণত মানবশরীরের কোষে ২৩ জোড়া অর্থাৎ ৪৬টা ক্রোমোজোম থাকে। সে জায়গায় যাদের একটা বেশি, অর্থাৎ ৪৭টা ক্রোমোজোম থাকে, চিকিৎসার পরিভাষায় তারাই ‘ডাউন সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত হয়। এটা কোনও অসুখ নয়, এটিকে একটি ডিসঅর্ডার বা অসামঞ্জস্য বলা যেতে পারে। প্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ শিশুর মধ্যে এক জন, এমন একটি ক্রোমোজোম বেশি নিয়ে জন্মায়। বস্তুত, এই একটি অতিরিক্ত ক্রোমোজোমই যত অসামঞ্জস্যের কারণ। প্রকৃতির খেয়ালে ঘটে যায় এই অনিয়ম, যার কারণে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নানা ধরনের জেনেটিক ত্রুটি দেখা যায় এদের।