এর আগে বহুবারই এ নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। এবার তাই রাষ্ট্রসংঘেই রোহিঙ্গা সমস্যার কথা উত্থাপন করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শত চেষ্টা সত্বেও শরণার্থীদের ফেরাতে না পেরে ফের আন্তর্জাতিক মঞ্চের হস্তক্ষেপ দাবি করলেন তিনি।
শুক্রবার, নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় সদস্য দেশগুলির সামনে পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরেন হাসিনা। ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা এখন আর শুধু বাংলাদেশের নয়, তা আঞ্চলিক সংকটের মাত্রা পেয়েছে। শরণার্থীদের সমস্যা এখন আর শিবিরগুলিতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। তা এখন রীতিমতো আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
শরণার্থীদের ফেরত নিতে মায়ানমারের অনীহার কথা তুলে সদস্য দেশগুলির প্রতিনিধিদের হাসিনা জানান, প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও এখনও পর্যন্ত একটি আরণার্থীকেও ফেরত নেয়নি মায়ানমার। সে দেশের সরকার ও নাগরিকদের মধ্যে তৈরি হওয়া সমস্যার ভার বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালেই মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে রাখাইন প্রদেশ থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নিতে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সেইমতো নাইপিদাওয়ের হাতে একাধিক তালিকাও তুলে দেয় ঢাকা। কিন্তু নানা অজুহাতে শরণার্থীদের ফেরত নিতে অস্বীকার করে মায়ানমার। যার ফলে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে রয়েছে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। রাখাইন প্রদেশে বার্মিজ সেনার হামলায় বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল তারা। তবে আশ্রয়প্রার্থী হয়ে এতদিন বাংলাদেশে ছিল যে রোহিঙ্গারা, আজ তারাই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে৷
মাদক কারবার থেকে শুরু করে খুন-ডাকাতি, বিদেশী কিশোরী-যুবতী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে এরা। যে কারণে আগেই রোহিঙ্গাদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে হাসিনা সরকার। পাশাপাশি বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের নাম তোলা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ পুলিশের দুর্নীতি দমন কমিশনও। তবে এবার সরাসরি রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে চেয়ে রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হলেন হাসিনা।