অ্যারিজোনার মরুভূমিতে ৪২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড গরমে প্রচণ্ড জলকষ্টে ধুঁকতে ধুঁকতে মৃত্যু হয়েছিল ছোট্ট গুরপ্রীত কৌরের। আমেরিকার মেক্সিকো সীমান্ত পেরোতে গিয়ে ধরা পড়েছিল গুরপ্রীত ও তার পরিবার। গুরপ্রীত বাঁচেনি, তবে গুরজন্ত ও অজয় বাঁচবেন কিনা সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে মার্কিন প্রশাসনও।
এক বছরেরও বেশি এল পাসোর একটি শরণার্থীর শিবিরে রয়েছেন ৩৩ বছরের অজয় কুমার ও ২৪ বছরের গুরজন্ত সিং। আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে তাঁদের আটক করে মার্কিন বর্ডার প্যাট্রল পুলিশ। গুরজন্তের দাবি, প্রথমে মনে করা হয়েছিল তারা সন্ত্রাসবাদী। পরে তাঁদের কাছে কোনও সন্দেহজনক জিনিসপত্র না পেয়ে ভুল ভাঙে মার্কিন শুল্ক ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের। তবে জেরা করা থামেনি। টেক্সাসের এই শরণার্থী শিবিরে আটকে রেখে লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁদের।
টেক্সাসের এল পাসোর শরণার্থী শিবির থেকে মুক্তির জন্য গত দু’মাস ধরে অনশন চালাচ্ছেন তাঁরা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই গুরজন্ত বলেছেন, “আমরা সন্ত্রাসবাদী নই। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি চাই। প্রথমে বলা হয়েছিল আমাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি আমরা।”
গত ৭৪ দিন ধরে অনশনে দুই যুবক। শরীর ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালে বিছানায় নাকে নল দিয়েই গুরজন্ত বলেছেন, “এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি না পেলে আমরণ অনশন চালিয়ে যাবো। এই ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দিরা এমনিতেই মৃতপ্রায়। আমরা নানা রকম অত্যাচারের শিকার।”
গত কয়েক বছরে ভারত থেকে মেক্সিকো সীমান্ত পার করে আমেরিকায় অনুপ্রবেশের সংখ্যা ক্রমেই বেড়েছে। গত বছর মার্কিন সীমান্ত থেকে অন্তত ৯ হাজার ভারতীয়কে আটক করা হয়েছে বলে দাবি। মেক্সিকো সীমান্তে মার্কিন বর্ডার প্যাট্রল পুলিশ এবং পিমা কাউন্টি অফিস অব দ্য মেডিক্যাল এগজামিনার (পিসিওএমই)-এর দাবি, মেক্সিকো সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এদের মতদ দিচ্ছে পাচারকারীরা। প্রচুর অর্থ রোজগারের তাগিদে তারা অনুপ্রবেশকারীদের নামিয়ে দিয়ে যায় মরুভূমি লাগোয়া মার্কিন সীমান্তে। গুরজন্ত বলেছেন, “পাঞ্জাবে আমার বোনকে অ্যাসিড ছুঁড়ে ঝলসে দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক অশান্তির বলি হয়েছিলেন আমার বাবা। আর আমি মার্কিন মুলুকে শরণার্থী শিবিরে বন্দি।”