সারা বছর অপেক্ষা করেন গড়ার জন্য। মাটির দলাকে খড় বিচুলির কাঠামোর গায়ে লেপে রূপ দান করেন দেবী দুর্গার। এবছরও তিনি প্রতিমা গড়ছেন, একাধিক প্রতিমায় করছেন চক্ষুদান। তাঁর হাতের ছোঁয়ায় মৃন্ময়ী অক্লেশে চিন্ময়ী হয়ে উঠছেন। যিনি করছেন তিনি আর কেউ নন কান্দি বিধানসভার বিধায়ক বনু খান ওরফে সফিউল আলম খান।
ধর্ম দিয়ে যখন দেশে মানুষে মানুষে বিভেদ হচ্ছে, সংঘর্ষ হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে যখন গোটা দেশ তোলপাড় হচ্ছে, তখন সফিউলের উত্তর, “শিল্পীর কোনও নিজস্ব সত্তা নেই। ছোট থেকেই আমাদের এখানে প্রতিমা তৈরি হয়। আমিও একসঙ্গে প্রতিমা তৈরি করি। শুধু দুর্গা নয়, কালী-সরস্বতী সবকিছুই তৈরি করি। মা দুর্গার চোখটা আমার হাতেই তৈরি হয়। মানুষের হয়ে কাজ করাই হল আমার কাজ। মানুষের সঙ্গে থাকি বলে আমাকে বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত করেছে এই এলাকার মানুষ। সেই কাজটাই করে যেতে চাই”।
কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার পদত্যাগ করায় উপনির্বাচনে কংগ্রেসের বিধায়ক হিসাবে জেতেন সফিউল। ভালো ফুটবল খেলোয়াড়, গায়ক ও শিল্পী হিসাবে তাঁর যথেষ্ট নামডাক এলাকায়। বিধায়ক হওয়ার পর এলাকার সকলে ভেবেছিলেন, হয়তো এ বছর তাঁকে আর বাধাপুকুর এলাকার ঠাকুর তৈরি করতে দেখা যাবে না। কিন্তু বিধানসভা অধিবেশনের ফাঁকেই যখনই বাড়িতে এসেছেন সফিউল, সকাল ও সন্ধ্যা সময় করে ঠাকুর তৈরিতে আগের মতো হাত লাগিয়েছেন। অন্য শিল্পীদের সঙ্গে। আরও চমক আছে। প্রতিমা তৈরি করতে যে টাকা খরচ হয়, সেই টাকাও দেন বিধায়ক। অনেক দিন ধরেই।