ঘন জঙ্গল উড়িয়ে তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম গণ–ডিটেনশন ক্যাম্প। আর আসামের গোয়ালপাড়ায় শ্রমিক হিসেবে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের অনেকেরই নাম নেই আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)–র চূড়ান্ত তালিকায়। তাই হয়তো এখানেই ঠাঁই হবে তাঁদের। আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তা সত্ত্বেও পেটের দায়ে এনআরসি তালিকা–ছুট এই মানুষগুলোই এখন ডিটেনশন ক্যাম্পের শ্রমিক।
গোয়ালপাড়ার প্রত্যন্ত এলাকায় নদীর ধারে সাতটি ফুটবল মাঠের সমান এলাকা জুড়ে তৈরি হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্প। ১৭টি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। প্রতিটি বাড়িতে ৩৫০ বর্গফুটের ২৪টা ঘর থাকবে। পুরুষ ও মহিলাদের থাকার আলাদা বন্দোবস্ত সেখানে। ক্যাম্পগুলিতে স্কুল, হাসপাতাল, বিনোদনের জায়গা, পানীয় জলের বন্দোবস্ত, নিরাপত্তারক্ষীদের কোয়াটার্স থেকে ওয়াচ টাওয়ার্স— সবই থাকবে। থাকবে না বহির্জগতের সঙ্গে সম্পর্ক। আগামী দিনে কমপক্ষে ৩,০০০ বন্দিকে রাখা হবে এখানে। সরকারি নির্দেশে আরও ১০টি ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি হবে আসামে। ক্যাম্প ঘেরা থাকবে ১০ ফুট উঁচু পাঁচিলে। পাঁচিলের ওপর কাঁটাতার।
আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকপঞ্জিতে নাম নেই ১৯ লাখ মানুষের। জন্মের শংসাপত্র, জায়গা–জমির মালিকানার কাগজপত্র দাখিল করে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে তাঁদের। ব্যর্থ হলে ঠাঁই হতে পারে ডিটেশন ক্যাম্পে। তালিকায় যাঁদের নাম নেই তাঁদেরই একজন হাজং উপজাতি সম্প্রদায়ের শেফালি হাজং। নিজের বয়সটাও ঠিক মতো জানেন না। কেন তালিকায় নাম ওঠেনি তা–ও জানেন না। এখন ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরিতে শ্রমিকের কাজ করছেন। মেয়ের সঙ্গে একই কাজ করেন শেফালির মা মালতী। জন্মের শংসাপত্র না থাকায় ঘুম উড়েছে তাঁদের।