গোটা জঙ্গল তন্নতন্ন করে খুঁজলেও মেলেনি খাবার। তাই মেজাজটা বিগড়ে। বেজাড় মুখে গজরাজ জঙ্গল ছেড়ে নেমে এলেন সড়কপথে। তাকে দেখেই থমকে গেল সমস্ত গাড়ি। দুরুদুরু বুকে তারা দেখতে লাগলেন গজরাজের কীর্তি। খিদের মুখে সারি দিয়ে দাঁড়ানো গাড়ি গুলিতেই হামলা চালালো ক্ষুধার্ত হাতিটি। বস্তা ফুঁড়ে কোথায় চাল, কোথাও ডাল। কিন্তু তাতেও তৃপ্তি না হওয়ায় ওষুধবোঝাই একটি পিক আপ ভ্যান উল্টে দিয়ে অবশেষে আবার জঙ্গলে প্রস্থান। এমনই রুদ্ধশ্বাস ঘটনার সাক্ষী রইল ঝাড়গ্রাম।
সূত্রের খবর, আজ সকাল ছটা নাগাদ গড়শালবনির জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পাঁচ নম্বর রাজ্যসড়কের উপর চলে আসে একটি দাঁতাল। লোধাশুলি পার হয়ে ঝাড়গ্রাম ঢোকার মুখে হাতি দেখে দাঁড়িয়ে পড়ে সমস্ত গাড়ি। দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনের সামনে ঘুরেই খাবারের খোঁজ করতে থাকে হাতিটি। কখনও থেমে থাকা বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে খাবার সংগ্রহের চেষ্টা। কখনও দাঁড়িয়ে পড়া ট্রাকে বস্তাবন্দি শস্যভাণ্ডারে হামলা চালাতে চলে দড়ি ত্রিপল খোলার চেষ্টা।দাঁত দিয়ে বস্তা ফুটো করে কিছু চাল ডাল নামাতে পারলেও তা মনের মতো হয়নি। জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার আগে তাই একটি ওষুধবোঝাই পিকআপ ভ্যানই উল্টে দেয় আর তারপরেই ঢুকে যায় জঙ্গলে।
ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হল্লাইচি বলেন, “জঙ্গলের হাতিকে তো আটকে রাখা যায় না। খাবারের অভাব হলেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। আজকের ঘটনাও তেমনই। এ দিনও খবর পেয়েই বন দফতরের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। তবে নিজে থেকেই জঙ্গলে ঢুকে যায় হাতিটি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, শালবনিতে রাস্তা আটকে হাতির খাবারের খোঁজ নতুন কিছু না। এর আগেও বহুবার খাবারের জন্য রাস্তা আটকেছে হাতি। বেশ কিছুদিন আগে খাবার না পেয়ে একটি মোটরবাইকও ভেঙেছে। তাঁরা বলেন, “এগুলি এখানকার রেসিডেন্সিয়াল হাতি হয়ে গিয়েছে। এই জঙ্গলে তিন থেকে চারটি রেসিডেন্সিয়াল হাতি রয়েছে। মাঝে মাঝেই এই হাতিগুলি খাবারের জন্য গ্রামে ঢুকে পড়ে। কারও বাড়ির চাল ভাঙে, কারও বাড়ির দরজা। তখন বনদফতরে খবর দেওয়া হয়।”