এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যজুড়েই চলছে তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী। তবে সোমবার ‘দিদিকে বলো’র ফলিত রূপই দেখল রাজ্যবাসী। গতকাল দুপুরে হাওড়ায় প্রশাসনিক সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেখানে পৌঁছনোর আগেই নবান্নের পাশে দু’নম্বর রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের হরিজন বস্তিতে আচমকাই দাঁড়িয়ে যায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। আড়াই ফুট চওড়া বস্তির গলিতে সটান ঢুকে যান মমতা। ঘরে ঢুকে ঢুকে কথা বলতে শুরু করেন সেখানকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে। জেনে নেন তাঁদের অভাব-অভিযোগ। আর তখনই তিনি জানতে পারেন, ওই বস্তির কারও কাছে রেশন কার্ড নেই।
শুধু তা-ই নয়, বস্তির নিকাশি ব্যবস্থা, আবর্জনার স্তূপ, শৌচাগারের অবস্থা, বসবাসের অযোগ্য পরিস্থিতি দেখে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। ব্যাস, আর যায় কোথায়! এরপরই মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে ভর্ৎসনা করেন এবং মন্ত্রী ববি হাকিমকে টাক্সফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন। এরপরই আজ থেকে বস্তি সাফাই অভিযানে নেমে পড়েছেন রাজ্যের মন্ত্রীগণ। গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশ মেনেই রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের নের্তৃত্বে ২৫ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন পৌরপিতা ও চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ দাস নিজে উপস্থিত থেকে ২৯ নং ওয়ার্ডের ২ নং রাউন্ড ট্যাংক লেন এবং অঞ্চলের অন্যান্য জায়গায় ময়লা জমা জল আবর্জনা পরিষ্কার করান।
গতকাল প্রশাসনিক সভায় গিয়ে হাওড়ার পুর কমিশনার তথা প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন বিজিন কৃষ্ণের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ‘আপনার এখানে পানীয় জলের সমস্যা হচ্ছে কেন?’ একই সঙ্গে তিনি সরব হন পুর পরিষেবার ব্যর্থতা নিয়েও। নির্দেশ দেন, ‘কাউন্সিলর নেই তো কী হয়েছে? আপনি বস্তিতে ঘুরবেন। সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবেন।’ শুধু তাই নয়, হাওড়া পুরসভা আর খাদ্য দফতরকে কঠোর নির্দেশ দেন বস্তির মানুষজনের সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে। এর পাশাপাশি মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম, অরূপ রায়, মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের নিয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স তৈরির নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী।