বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের তৎপরতায় এবং বারংবার আশ্বাসে কোনওক্রমে হল শেষরক্ষা। নয়াদিল্লীতে বিজেপির সর্বভারতীয় সদর দফতরে তখন পৌঁছে গিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক সেরে বিজেপিতে যোগ দেবেন শোভন-বৈশাখী, সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁদের দলে স্বাগত জানানো হবে— এই আনুষ্ঠানিকতাটাই শুধু বাকি তখন। ঠিক এই সময়েই উঠল ‘ঝড়’। শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে পারলেন যে, রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়ও হাজির হয়েছেন বিজেপি সদর দফতরে। এবং বিজেপিতে যোগ দেবেন বলেই তিনি হাজির হয়েছেন।
তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণে এক সময়ে শোভনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন দেবশ্রী রায়। রায়দিঘির মতো দুর্ভেদ্য বাম ঘাঁটি থেকে পর পর দু’বার অভিনেত্রী দেবশ্রীকে জিতিয়ে আনার মূল কৃতিত্বও যে শোভনেরই ছিল, সে কথা তৃণমূলের অনেকেই স্বীকার করেন। কিন্তু পরবর্তী কালে সে সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছয়। এবং এখন তিক্ততা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা স্পষ্ট বোঝা যায় দেবশ্রীর যোগদানের সম্ভাবনার কথা শুনে শোভনের বেঁকে বসার খবরেই।
দেবশ্রী রায় যদি বিজেপিতে যোগ দেন, তা হলে তাঁরা যোগদান করবেন না— পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননকে সে কথা সাফ জানিয়ে দেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র।
বিকেল ৪টেয় এ দিন বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কথা ছিল শোভন-বৈশাখীর। কিন্তু বিজেপি দফতরে দেবশ্রী রায়ের পদার্পণের খবরে যে ঝড় ওঠে, তাতে শোভনদের যোগদান ক্রমশ বিলম্বিত হতে থাকে। অরবিন্দ মেননরা অবশেষে বার বার শোভনকে আশ্বাস দিতে থাকেন যে, দেবশ্রী রায়কে বিজেপি-তে যোগদান করানো হবে না। বিজেপি সদর দফতর সূত্রের খবর অন্তত সে রকমই। মেননদের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরে শোভন দলে যোগদানে সম্মত হন এবং বিকেল ৫টার একটু পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁদের আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাগত জানানো হয়।