সোমবার তিন দিনের চীন সফরে সারতে বেজিং পৌঁছেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ইতিমধ্যেই চিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং কুইশানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, এ বছরের শেষের দিকে ভারত সফরে এসে নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক করার কথা চিনা প্রেসিডেন্টের। তাই মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসে নতুন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের এই সফরের লক্ষ্য হল চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সম্ভাব্য সেই ভারত সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করা। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষের দিকে চিনফিংয়ের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক হবে। সে ক্ষেত্রে উহান শীর্ষ বৈঠকের পরে এটিই হবে দুই দেশের দ্বিতীয় ঘরোয়া শীর্ষ বৈঠক। তবে জয়শঙ্করের সফরসূচী পূর্ব নির্ধারিত হলেও জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা নিয়ে গত মঙ্গলবারই অসন্তোষ জানায় চীন। মত পার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু তা যেন সঙ্ঘাতে পরিণত না হয়। চিন সফরে গিয়ে এমনই বার্তা দিলেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খোলাখুলি অসন্তোষও প্রকাশ করেছে চীন। চীন কিছুতেই মানতে পারেনি মোদী সরকারের এহেন হঠকারী সিদ্ধান্তকে। তাই নিজেদের অবস্থান ঠিক রাখতে জয়শঙ্করের মতে, বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার মধ্যে দুই আঞ্চলিক শক্তির পারস্পরিক সম্পর্কে স্থিতিশীলতা বজায় থাকা অত্যন্ত জরুরি।
এর আগে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিল চীন। বিষয়টি যেহেতু ভারত-পাকিস্তানের ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িত, তাই একতরফা ভাবে স্থিতাবস্থার পরিবর্তন ঘটানো বা উত্তেজনা বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ এড়িয়ে চলা উচিত বলেই মন্তব্য করেছিল বেজিং। এ দিনের বৈঠকের পরেও একই সুর ধরা পড়ে চীনের বিদেশমন্ত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর
ওয়াং ই-র গলায়। তিনি জানান, কাশ্মীর নিয়ে একই অবস্থানে রয়েছেন তাঁরা। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভারত গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। বৈঠকের পর চিনা বিদেশমন্ত্রকের তরফেও একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নিয়ম-নীতি মেনে এবং শিমলা চুক্তির কথা মাথায় রেখেই ভারতকে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে হবে।
গত সপ্তাহের শুরুতে রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খারিজ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। উপত্যকাকে দু’টুকরো করে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ, দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলও গঠনের বিল পাশ হয় সংসদে। ভারতের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে চিন। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনাইং বলেছিলেন, ‘‘ভারত-চীন সীমান্তের পশ্চিম অংশের চিনা ভূখণ্ডে,যা ভারতের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে,সেখানে ভারতের প্রবেশ নিয়ে চীন বরাবরই আপত্তি জানিয়ে এসেছে। এখন ভারত তার অভ্যন্তরীণ আইনে একতরফা পরিবর্তন করে চীনের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্বে আঘাত করেছে। সেটা কার্যকরী হবে না। চীন এটা মানবেও না।’’