বাংলা জুড়ে অব্যাহত সন্ত্রাস। ফের হামলা তৃণমূল কর্মীর ওপর। গোঘাটের নকুন্ডা এলাকায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে বোমাবাজিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল গোটা এলাকায়। আচমকাই এভাবে বোমাবাজির ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা সন্ত্রস্ত হয়ে উঠেছেন। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠল গেরুয়া শিবিরের দিকে।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গোঘাটের নকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূল নেতা সঞ্জীব চানকের বাড়ি গোঘাটের কোটা গ্রামে। সঞ্জীববাবু জানিয়েছেন, রবিবার রাত বারোটা কুড়ি নাগাদ হঠাৎই তাঁদের বাড়ির সামনে সশব্দে বোমা ফাটে। পরপর দুটি বোমার আওয়াজে তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তখন বাড়িতে ছিলেন স্ত্রী, ছেলে, দাদা–বৌদি এবং তাঁর ৮০ বছরের বৃদ্ধ বাবা লালমোহন চানক। বোমা ফাটার শব্দ বিছানার ওপরে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন সঞ্জীববাবুর বাবা। তখন চলন্ত পাখায় তাঁর মাথা কেটে যায়।
এরপর সঞ্জীববাবু গোঘাট থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। তারা আরও একটি বোমা উদ্ধার করে। সঞ্জীববাবু বৃদ্ধ বাবার চিকিৎসার জন্য পুলিশ গাড়িতে করে চিকিৎসক বাড়িতে নিয়ে আসে। সঞ্জীববাবুর বাবার মাথায় দুটি সেলাই দিতে হয়েছে।
প্রতিবেশী গণেশ চানক বলেন, ‘বোমা ফাটার শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ছেলে–মেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে দোতলার ঘরে চলে যাই। দরজা–জানলা বন্ধ করে ঘরে বসেছিলাম। কারণ গত কয়েকদিনে এই অঞ্চলে দুটো খুন হয়ে গেছে। তাই ভয় নড়তেও পারিনি। এলাকার সকলে বোমার শব্দ শুনলেও কেউ বাইরে বের হওয়ার সাহস দেখাতে পারেননি।’
এ বিষয়ে গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, ‘এ যেন আবার সিপিএমের সন্ত্রাসের রাজত্ব ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। গত ৮ বছর গোঘাটে কোনও অশান্তি, সন্ত্রাস ছিল না। কিন্তু সিপিএমের হার্মাদরা এখন আবার বিজেপি–র জামা গায়ে দিয়ে নতুন করে এলাকায় সন্ত্রাস ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে আমরা কিছু বলব না, যা করার প্রশাসন করবে। তবে আমাদের ওপর আক্রমণ করলে প্রতিরোধ আমরা করবই। আমরা চাই প্রশাসন ওইসব দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক। আসলে সাধারণ মানুষ এখন থেকেই ওদের স্বরূপ বুঝতে পেরেছে। তাই বিজেপি–র প্রতি সাধারণ মানুষের মোহভঙ্গ হচ্ছে। তারা দূরে সরে যাচ্ছে। আর তা দেখেই বিজেপি দুষ্কৃতীরা এলাকায় সন্ত্রাস করে ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ তা মেনে নেবেন না। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে এর যোগ্য জবাব দেবেই।’