বিগত কয়েকদিন ধরেই খবরের শিরোনামে দেশের গাড়ি শিল্প। বলা হচ্ছে, এমনভাবে গাড়ি শিল্পে ধস কোনোদিন নামেনি। গত সপ্তাহে গোটা দেশে গাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় তিনলাখ কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। আর এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই অর্থনীতিবিদদের চিন্তা বাড়িয়েছে দেশে ব্যক্তিগত যাত্রীবাহী গাড়ি বা পিভি শিল্পের নিম্নমুখী বাজার। গত ৯ মাসে ব্যক্তিগত যাত্রীবাহী গাড়ি বা পিভি বিক্রি ৩০.৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ২০০৭৯০ ইউনিট। যেখানে ২০১৮–য় জুলাই পর্যন্ত গাড়ি বিক্রি হয়েছিল ২৯০৯৩১ ইউনিট।
সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স বা সিয়ামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে ৩৫.৯৫ শতাংশ কমে পিভি বিক্রি হয়েছে ১২২৯৫৬ ইউনিট। সেখানে ২০১৮–র জুলাইয়ে পিভি বিক্রি হয়েছিল ১৯১৯৭৯ ইউনিট। সিয়ামের ডিজি বিষ্ণু মাথুর বলেছেন, “গত ১৯ বছরে এটাই সব থেকে বড় ঘাটতি গাড়ি শিল্পে। ২০০০ সালে শেষবার গাড়ি শিল্পে মন্দ দেখা দিয়েছিল। তবে এতটাও পতন সেইবছর হয়নি। সাম্প্রতিক কালে ৩০০টি গাড়ির ডিলারশিপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আড়াই লক্ষ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। গাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ১০ লক্ষ মানুষের চাকরি সঙ্কটাপন্ন।” তিনি আরও বলেন যে, “দেশের গাড়ি শিল্পে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সাহায্য প্রয়োজন। যাতে এই শিল্প পুনর্জীবিত হতে পারে।
বাইক বিক্রি গত বছরের তুলনায় ১১.৮৮ শতাংশ কমে হয়েছে ৯৩৩৯৯৬ ইউনিট। যেখানে একবছর আগেই বাইক বিক্রি হয়েছিল ১১৫১৩২৪ ইউনিট। সব ধরনের দুচাকার যান জুলাইয়ে ১৬.৮২ শতাংশ কমে হয়েছে ১৫১১৬৯২ ইউনিট। ২০১৮–র জুলাইয়ে তা ছিল ১৮১৭৪০৬ ইউনিট। বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রি জুলাইয়ে ২৫.৭১ শতাংশ কমে হয়েছে ৫৬৮৮৬ ইউনিট। সেখানে একবছর আগে এই সংখ্যাটা ছিল ৭৬৫৪৫ ইউনিট। নথিভুক্ত গাড়ির বিক্রি ১৮.৭১ শতাংশ কমে হয়েছে ১৮২৫১৪৮ ইউনিট। সেখানে ২০১৮–র জুলাইয়ে এটা ছিল ২২৪৫২২৩ ইউনিট।
স্বাভাবিকভাবেই গোটা দেশে গাড়ি শিল্পে এমন মন্দায় কপালে ভাঁজ পড়েছে গাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা লাখ লাখ মানুষের। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের সঙ্গে হওয়া আলোচনা সদর্থক হওয়ায় কেন্দ্রের তরফে সহায়তা মিলবে বলেই আশা করছেন তাঁরা।