শোশানা ওভিৎজের বয়স এখন ১০৪। ভারি কাচের চশমার কোনা দিয়ে দেখা যাচ্ছে অনেক কিছু দেখা চোখ দুটো আনন্দে জ্বলজ্বল করছে। হুইলচেয়ারে বসে আছেন বৃদ্ধা। তাঁকে ঘিরে ধরে অন্তত ৪০০ জন। সকলেই তাঁর রক্তের সম্পর্কের, ছেলে-মেয়ে-নাতি-পুতি। লতাপাতায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা উত্তরপুরুষ। উৎসবের উপলক্ষ শোশানা ওভিৎজের জন্মদিন।
৭৪ বছর আগে আউশভিৎসের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন। তার পরে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে তাঁর বয়স এখন ১০৪। জন্মদিনে নাতি-নাতনিদের কাছে একটাই উপহার আবদার করেছিলেন। লতাপাতায় যেখানে যত বংশধর রয়েছে তাঁর, জন্মদিনটা সকলকে নিয়ে কাটাতে চান। শোশানার সেই ইচ্ছে পূরণ করতেই গত বুধবার জেরুসালেমের ‘ওয়েস্টার্ন ওয়াল’-এ জড়ো হয়েছিলেন চারশো জন।
হলোকস্টের পরে ডোভ ওভিৎজ নামে ক্যাম্প-ফেরত এক ইহুদির সঙ্গে আলাপ হয় শোশানার। ডোভের স্ত্রী ও চার মেয়ে খুন হয়েছিলেন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে। শোশানার মাকে খুন করেছিল নাৎসি চিকিৎসক জোসেফ মেঙ্গেল। পরিবারের আর কেউ বেঁচে আছেন কি না, ডোভ আর শোশানা এক সঙ্গে খুঁজতে থাকেন। সেই থেকেই বন্ধুত্ব। পরবর্তী কালে তাঁরা বিয়ে করেন।
শোশানার বড় নাতনি নিনা ফ্রেডম্যান বলেন, ‘‘খুব সহজ ছিল না গোটা বিষয়টা আয়োজন করা। আমাদের নির্দিষ্ট করে জানাই ছিল না কত জন বংশধর, তাঁরা কে কোথায় রয়েছেন। আমরা চারশো জনকে জড়ো করতে পেরেছি।’’ সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন ছিল। কাউকে ফোন তো কাউকে মেসেজ, কাউকে আবার ইমেল করা হয়েছিল। চারশো জনকে জড়ো করতে পারলেও অনেকে বাদ পড়েছেন। ‘‘অন্তত ১০ শতাংশ তো হবে’’— আক্ষেপ নিনার।