‘পাঙ্গা নিলেই আমি চাঙ্গা হয়ে যাই’ – যতবারই বিজেপির রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়েছেন, ঠিক এ কথা বলেই রুখে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। লোকসভা ভোটের আগেও কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার লড়াইয়ে ধর্ণা অস্ত্র ব্যবহার করেই নৈতিক জয় পেয়েছিলেন তিনি। এবার রাজ্য জুড়ে দুর্গাপুজোগুলির ওপর আয়কর দফতরের কর বসানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই ধর্ণায় বসছে তৃণমূল। জানা গেছে, আগামী মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট তৃণমূলের ‘বঙ্গজননী বাহিনী’ সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারে ধর্ণায় বসবে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত চলবে ধর্ণা।
রবিবার নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই উৎসব সকলের। আমরা চাই না এই উৎসবের ওপর কর চাপানো হোক।’ আর ‘বঙ্গজননী বাহিনী’র চেয়ারম্যান তথা সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, ‘দুর্গাপুজো আমাদের বিশেষ উৎসব। আমাদের সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়েছে। ধর্ণার প্রস্তুতি চলছে। কলকাতার আশপাশের জেলা থেকে ওইদিন সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারে লোকজন আসবে। দুর্গাকে আমরা ঘরের মেয়ে মনে করি। বাঙালির ভাবাবেগের ওপর আঘাত আনা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, পুজো কমিটিগুলির কাছে আয়কর দফতর থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে, উৎসব উপলক্ষে তারা যে টাকা সংগ্রহ করে, তার উৎস কী? ওই অর্থ কীভাবে খরচ হয়, তার ব্যাখ্যাও চেয়েছে আয়কর দফতর। বলা হয়েছে, অর্থসংগ্রহ ও খরচের ওপর কর দিতে হবে। উদ্যোক্তাদের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠি পেয়ে পুজোর কর্মকর্তারা প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা তো করেছেনই, পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সুরুচি সঙ্ঘের কর্ণধার তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘নির্বাচনের প্রচারের সময় বিজেপি মিথ্যে কথা বলে গেল। কোটি কোটি টাকা নির্বাচনে খরচ করল। নেতারা বললেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজো বন্ধ করে দিচ্ছেন। যাঁরা এই ধরনের কথা বলেছেন, তাঁরাই এখন বাংলায় পুজো বন্ধ করে দিতে চাইছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। এটা বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর চরম আঘাত। বিজেপি বাংলার সংস্কৃতি জানে না। ওরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে।’ ত্রিধারা পুজো কমিটির তরফে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘এটা অন্যায়। আয়কর দফতর এটা করতে পারে না। রাজনৈতিক দলগুলি যখন টাকা তুলে নির্বাচন করে, তখন তো কোনও কর নেওয়া হয় না। পুজো থেকে কেন কর দেওয়া হবে। এটা অগণতান্ত্রিক।’