কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপোড়েন লেগেই আছে। ভারতের সঙ্গে একের পর এক সম্পর্ক ছিন্ন করছে পাকিস্তান সরকার। তারই মধ্যে গতকাল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পাকিস্তান। আংশিক আকাশপথ সীমা বন্ধের পাশাপাশি ‘সমঝোতা এক্সপ্রেস’ও বন্ধের ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ। কিন্তু ঘোষণা করার আগেই সমঝোতা এক্সপ্রেস পাকিস্তান থেকে দিল্লীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দেয়। আর এই ঘোষণার পরই বিপাকে পড়েন সমঝোতা এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। বহু উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে ওয়াঘা পেরিয়ে অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধে ৮টা নাগাদ দিল্লী পৌঁছায় সমঝোতা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই সাংবাদিক বৈঠক করে আনুষ্ঠানিক ভাবে সমঝোতা এক্সপ্রেসের পরিষেবা বন্ধের ঘোষণা করেন পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ। ওয়াঘা সীমান্তে আসতেই ট্রেনের পাকিস্তানি গার্ড, চালক ও অন্যান্য কর্মীরা ভারতে ঢুকতে অস্বীকার করেন। ফলে ট্রেনের ভিতরেই আটকে পড়েন ১১৭ জন যাত্রী। যাঁদের মধ্যে আবার ৪৮ জন ছিলেন পাকিস্তানি। ওয়াঘার স্টেশন মাস্টার প্রথমে ভারত সরকারকে চিঠি লিখে জানান, পাকিস্তানের রেলকর্মীরা সমঝোতা এক্সপ্রেস নিয়ে ভারতে ঢুকতে চাইছেন না। তাই ভারত ট্রেনটিকে আনার জন্য কয়েকজন রেলকর্মী পাঠাক। তাঁদের যেন পাসপোর্ট ও ভিসা থাকে। প্রায় ঘণ্টা চারেকের উদ্বেগের পরে ভারতীয় রেলের চালক, গার্ড ও কর্মীদের দল সেখানে পৌঁছয়। তাঁরাই ভারতের এ পারে আটারি পর্যন্ত নিয়ে আসেন ট্রেনটিকে।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যসভায় ঘোষণা করেন, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হল। তারপরেই ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রায় বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান। গত বুধবারই ইসলামাবাদে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বহিস্কার করে ইসলামাবাদ। অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একপ্রকার ছিন্নই করেছে তারা। পুলওয়ামা ও বালাকোট কাণ্ডের পরে পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতের জন্য আগেই বন্ধ করে দিয়েছিল ইসলামাবাদ। যদিও পরে ইসলামাবাদের তরফে জানানো হয়েছিল পাক আকাশসীমা পুরোপুরি বন্ধ করা হয়নি। এ বার ৩৭০ ধারা রদের পরে নিষেধাজ্ঞা জারি হলো দিল্লী-লাহৌর সমঝোতা এক্সপ্রেসের উপরেও।