দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেই, আসামে ফের এনআরসি নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছে মোদী সরকার। দিন কয়েক আগেই এনআরসিতে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস সাংসদের মাকে। বাদ যাননি কার্গিল যোদ্ধা প্রাক্তন সেনাকর্মী মহম্মদ সানাউল্লাহ ও তাঁর পরিবারও। তাঁকে ‘বিদেশি’ তকমা দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিল। এবার জানা গেল, আসামে ৫ লাখের বেশি মানুষ নাগরিকত্ব হারাতে চলেছেন। যার মধ্যে বাঙালি-অধ্যুষিত জেলাগুলোতে বাদ যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি নাম! এনআরসি তালিকা প্রকাশের আগেই বিধানসভায় দেওয়া আসাম সরকারের তথ্য থেকেই বিষয়টি স্পষ্ট।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩১ আগস্ট প্রকাশিত হবে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। তার আগে আসামের পরিষদীয় মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটওয়ারী প্রকাশ করেন জেলা ভিত্তিক এনআরসি খতিয়ান। এ কারণে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। উল্লেখ্য, গত বছর প্রকাশিত এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় বাদ পড়ে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম। এ বছর নাম সংযোজন ও সংশোধনে আরও ১ লাখ ২ হাজার ৪৮২ নাম বাদ যায়। এঁদের মধ্যে বেশির ভাগই বাঙালি। পাটওয়ারী জানান, চূড়ান্ত তালিকায় ১২.৫ শতাংশ আবেদনকারীর নাম থাকছে। বাঙালি-অধ্যুষিত করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, বরপেটা, নগাঁও প্রভৃতি জেলায় বাদ যাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি।
তবে জানা গেছে, এত নাম বাদ দিয়েও নাকি খুশি নন আসামের বিজেপি নেতারা। তাই কড়া সমালোচনা করা হচ্ছে এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলার। এমনকী, সুপ্রিম কোর্টও সমালোচনার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না! বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব প্রতীক হাজেলা সমালোচনা করতে গিয়ে অভিযোগ করেছেন, বিদেশি বলে ঘোষিত এক বাংলাদেশির নাম এনআরসি ভুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, গোটা প্রক্রিয়াটাই ভুলপথে পরিচালিত হচ্ছে। দেড় কোটি বাংলাদেশি মুসলিমকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে এনআরসি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
বাস্তব ছবিটা কিন্তু ঠিক এর বিপরীত। গত মঙ্গলবারই নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ দিতে গিয়েছিলেন দুই বাঙালি। দরং জেলার সিপাঝাড়ের বাসিন্দা সৈজুদ্দিন আলি ও আবদুল খালেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দুজনেই ‘বাংলাদেশি’। এভাবে রাজ্যের নানা জায়গায় বাঙালিদের গায়ে ‘বাংলাদেশি’ তকমা লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।