জুন মাস শেষ হতে চলল, কিন্তু এখনও বর্ষার দেখা নেই। বঙ্গবাসী ভ্যাপসা গরমে ঘেমে-নেয়ে একসা। আরাম খুঁজতে এসি আর ঠান্ডা জল/পানীয় ভরসা। আর সেই ফাঁক গলেই শরীরে সেঁধিয়ে যাচ্ছে অ্যালার্জেন, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া। ফলে ঘরে-ঘরে জ্বর, সর্দিকাশি, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে কাঁচা জল, চোখ ছলছল লেগেই আছে। জ্বর-সর্দি সেরে গেলেও সারতে চাইছে না কাশি। সংক্রমণ থেকে মুক্তি মেলার পরেও গলায় অস্বস্তি, গলা খুসখুস এবং আচমকা প্রবল কাশির দমকে প্রাণ ওষ্ঠাগত অনেকেরই। কেন এমন হচ্ছে, কী করলেই বা নিষ্কৃতি মিলবে-বিশেষজ্ঞরা সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন।
জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই বর্ষায় অভ্যস্ত বঙ্গবাসী। ঋতু বদলের জেরে তখন সাময়িক সমস্যা হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কিন্তু চলতি বছর এই সময়টায় সকলেই অনভ্যাসের পরিবেশের সঙ্গে যুঝছেন। ফলে শরীরের জৈবঘড়ি সেই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির জেরে তাপমাত্রার আচমকা হেরফের সেই সমস্যাকে ঘোরতর করে তুলছে। সঙ্গে দোসর ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী দূষণ। ফলে নানা ধরনের অ্যালার্জি ও ভাইরাসঘটিত সংক্রমণের কবলে পড়ছে শ্বাসনালী। তার জেরেই সর্দি-কাশি-জ্বর।
এসি এবং ঠান্ডা জল/পানীয় সবচেয়ে বেশি দায়ী। শরীরের নিজস্ব থার্মোস্ট্যাট সহসা তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সাময়িক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তখনই অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায় হাঁচ-কাশি, নাক দিয়ে কাঁচা জল পড়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এসি-তে ঢোকা-বেরোনোর সময়ে শরীরকে আগে একটু সইয়ে নেওয়া জরুরি। খুব ঠান্ডা জল/পানীয় এড়িয়ে চলুন।
আজকাল ভাইরাসঘটিত সংক্রমণের পর কাশি সাধারণত দু’ থেকে চার সপ্তাহ থেকে যায়। উপর্যুপরি অ্যালার্জি সেটাই বাড়িয়ে দেয়। গার্গল করলে কিংবা ভেপার নিলে, সামান্য গরম জল কিংবা মধু খেলে, মুখে আদা কিংবা লবঙ্গ রাখলে ভালো ফল মেলে। গলার অস্বস্তিও দূর হয়। গলার কাছে যে শ্লেষ্মা থাকার অনুভূতি হচ্ছে, তা অনেক সময়েই হাইপার-অ্যাসিডিটি থেকে হয়। সে সমস্যা সামলে রাখলে গলার অস্বস্তিতে লাভ মেলে।