এর আগে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলিয়ে এক মুসলিম ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল আসামের বরপেটায়। বাদ যায়নি দেশের রাজধানী দিল্লীও। সেখানেও ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় আক্রান্ত হতে হয় এক মুসলিম যুবককে। আসাম ও দিল্লীর পর এবার অমনই একটি ঘটনার সাক্ষী থাকল ঝাড়খণ্ড৷ চোর সন্দেহে সেখানে বেধড়ক মারধর করা হল এক মুসলমান যুবককে৷ একটানা ১৮ ঘণ্টা ধরে মারধরের পাশাপাশি তাঁকে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানো হয় বলেও অভিযোগ৷ অত্যাচারের জেরে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সি ওই যুবকটির মৃত্যু হয়েছে৷
নিহত ওই যুবকের নাম তবরেজ আনসারি৷ পুণেতে দিনমজুরের কাজ করতেন তিনি৷ ঈদের ছুটি কাটাতেই গ্রামে এসেছিলেন তবরেজ৷ সেখানে পরিজনেরা তাঁর বিয়েরও বন্দোবস্ত করেছিলেন বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন দুজনের সঙ্গে জামশেদপুরে যাচ্ছিলেন তবরেজ৷ অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডের খারসাওয়ান দিয়ে যাওয়ার সময় চোর সন্দেহে বেশ কয়েকজন তাঁকে ঘিরে ধরে৷ সুযোগ বুঝে দুই সঙ্গী পালিয়ে যায়৷ উন্মত্ত জনতার রোষের শিকার হন তবরেজ৷ স্থানীয়রা কেউ লাঠি আবার কেউ বা হাত দিয়ে তবরেজ ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করতে থাকে৷
আক্রমণকারীদের কাছে হাজার কাকুতি মিনতি করলেও কোনও লাভ হয়নি৷ একটানা প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে এভাবেই তবরেজের উপর চলে অকথ্য অত্যাচার৷ মারধরের পাশাপাশি তবরেজকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ৷ তবরেজকে না বাঁচিয়ে, অমানবিকভাবে তাঁর ওপর অত্যাচারের ছবি-ভিডিও মোবাইল বন্দী করতেও দেখা গিয়েছে অনেককেই৷ সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে৷ যা পুলিশের কাছেও এসে পৌঁছেছে৷ জানা গেছে, পুলিশি হস্তক্ষেপেই ওদিন তবরেজকে উদ্ধার করা হয়৷
প্রথমে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হলেও গত শনিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তবরেজকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ সেখানেই প্রহৃত ওই মুসলমান যুবকের মৃত্যু হয়৷ ভিডিওর সূত্র ধরে পুলিশ ইতিমধ্যেই পাপ্পু মণ্ডল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে৷ তিনি গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ বলেই জানা গেছে। পুলিশের তরফ থেকে জানান হয়েছে, বাকিদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। পাশাপাশি, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানও নেওয়া হচ্ছে। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।