তাঁর কার্যকাল শেষের সময় ছিল ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি। কিন্তু তার ছয় মাস আগেই পদত্যাগ করলেন আরবিআই-এর ডেপুটি গভর্নর বিরাল আচার্য। ২০১৬-র ডিসেম্বরে উর্জিত প্যাটেল আরবিআই-এর গভর্নর হওয়ার পর অন্য তিন ডেপুটি গভর্নরের সঙ্গেই চতুর্থ ডেপুটি গভর্নর হিসেবে বহাল হয়েছিলেন বিরাল। সেই উর্জিতের পদত্যাগের ছয় মাসের মাথায় পদত্যাগ করলেন তাঁর এককালীন সহকর্মীও। আরবিআই-এর স্বশাসন সহ একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মতান্তরের জেরে গত ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেছিলেন উর্জিত। তখনই বিরালও কার্যকাল শেষের আগেই চলে যেতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছিল। কারণ গত অক্টোবরে বিরালের আগুন ঝরানো বক্তৃতার মাধ্যমেই দেশবাসী আরবিআই এবং কেন্দ্রের ভিতরের সংঘাত সম্পর্কে অবহিত হয়েছিলেন। যদিও কেন্দ্র বিরালের পদত্যাগের সম্ভাবনার কথা তখন খারিজ করেছিল।
পদত্যাগের কারণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বলে জানিয়ে বিরাল বলেছেন, ফের তিনি নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টার্ন স্কুল অফ বিজনেসে নিজের কাজে ফিরে যাবেন। সেখান থেকেই আরবিআই–এ যোগ দিয়েছিলেন উর্জিত ঘনিষ্ঠ এই কর্মী। এবার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির বদলে আগামী অগাস্টেই স্টার্ন স্কুলে যোগ দেবেন তিনি। কারণ তাঁর পরিবার নিউ ইয়র্কেই থাকেন।
৪২ বছরের বিরাল মুম্বই আইআইটি–র কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। ১৯৯৫ সালে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পদক পেয়েছিলেন তিনি। তারপর নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করে সেখানেই থেকে যান। মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিরালের নীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই জানাচ্ছেন অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা।
বিরাল পদত্যাগ করলেও আরেক ডেপুটি গভর্নর এনএস বিশ্বনাথনের কার্যকালের সময় বর্ধিত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেই কার্যকাল শেষ হতে চলেছে বিশ্বনাথনের। বিরালের পদে আগামী ডেপুটি গভর্নর হতে পারেন আরবিআই–এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাইকেল পাত্র বা কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যাল।
উর্জিত পটেল ইস্তফা দেওয়ার পরই জোর জল্পনা চলছিল ইস্তফা দিতে পারেন উর্জিত-ঘনিষ্ঠ বিরলও। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তখন সেই সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করে। ২০১৮-র ডিসেম্বরে ইস্তফা দিয়েছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল। সরকারের কাছে পাঠানো ইস্তফাপত্রে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে বিভিন্ন সূত্র মারফত্ জানা যায়, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাজকর্মে ‘সরকারি হস্তক্ষেপ’ই এর অন্যতম কারণ ছিল। বিরলের ইস্তফা ফের সেই প্রশ্ন তুলে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।