মামলা আছে, অথচ তার নিষ্পত্তির জন্য পর্যাপ্ত বিচারক নেই! তাও আবার দেশের শীর্ষ আদালতে! হ্যাঁ, যত দিন যাচ্ছে, ততই একের পর এক মামলা জমে ক্রমশ মামলার পাহাড় তৈরি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে৷ কিন্তু বিচারপতির অভাবে সেগুলি নিষ্পত্তি সম্ভব না৷ যদিও এতে কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা তাঁর সরকারের। যার ফলে এই সমস্যায় দিনের পর দিন জর্জরিত হয়ে কার্যত ঠেলে ঠেলে এগিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে দেশের ন্যায়ালয়ের পিঠস্থানকে। এ হেন পরিস্থিতিতে সমস্যার আশু সমাধান চেয়ে মোদীকে দু’-দুটি চিঠি লিখলেন ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ৷
প্রথম চিঠিতে মোদীকে বিচারপতির অপ্রতুলতার কথা মনে করিয়ে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আর্জি জানিয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতি৷ ওই চিঠিতে তিনি লেখেন, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে ৫৮ হাজার মামলা ঝুলছে৷ কিন্তু বিচারপতির অভাবে সেগুলির শুনানি করা সম্ভব হচ্ছে না৷ যার ফলে দিনের পর দিন পিছিয়ে যাচ্ছে মামলাগুলির শুনানি৷ আবার নতুন করেও অনেকে মামলা করছেন৷ ফলে প্রতিদিনই মামলার সংখ্যা বাড়ছে৷ এদিকে সর্বোচ্চ আদালতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারপতি নেই৷ অবস্থা এমনই যে, গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলির ফয়সলা করার জন্য সাংবিধানিক বেঞ্চও তৈরি করা যাচ্ছে না। এতে সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে৷
গোটা বিষয়টিকে আরও ভালোভাবে ব্যাখ্যা করে রঞ্জন গগৈ জানান, ১৯৮৮ সালে শীর্ষ আদালতে বিচারপতির সংখ্যা ছিল ১৮ পরে তা বাড়িয়ে করা হল ২৬। এরপর বর্তমানে শীর্ষ আদালতে বিচারপতির সংখ্যা করা হল ৩১ জন। অথচ মামলা রয়েছে ৫৮ হাজার। যার অর্থ দাঁড়ায় একজন বিচারপতি পিছু ১৯০০ মামলা। একজন বিচারপতির পক্ষে এটা কি কখনও সম্ভব? প্রশ্ন তোলেন গগৈ। প্রতিষ্ঠানের কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং মামলার নিষ্পত্তি করে বিচারপ্রার্থীদের সুবিচার পাইয়ে দিতে দ্রুত বিচারপতি নিয়োগ প্রয়োজন বলে জানান তিনি। এর পাশাপাশি, নিজের লেখা আরেকটি চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচারপতিদের অবসরের সময়সীমা বাড়িয়ে ৬২ বছর, ৬৫ বছর করার আর্জিও জানান গগৈ। আদৌ মোদী সরকার এই সমস্যা সমাধানে কোনও ব্যবস্থা নেয় কিনা, সেটাই এখন দেখার।