দিন কয়েক আগেই নজরুল মঞ্চে রাজ্যের সমস্ত পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরদের বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “যাঁরা কাটমানি নিয়েছেন ফেরত দিন। কোনও চোরকে আমি দলে রাখব না।” তারপরেই ‘কাটমানি’ রোগ যেন মাথাচাড়া দেয় রাজ্যে। বীরভূম থেকে ঝাড়গ্রাম, বর্ধমান থেকে হুগলী সর্বত্রই কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে নেতাদের। এর মধ্যেই কাটমানি নেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগে অপসারণ করা হল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা সরকারকে। শনিবার পুরবোর্ডের বৈঠকে তাঁকে ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের বক্তব্য, “শান্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমেছিল। এত দিন কিছু করা যাচ্ছিল না। কিন্তু সর্বোচ্চ নেতৃত্ব সংকেত দিতেই ব্যবস্থা নিল দল।” কী অভিযোগ শান্তার বিরুদ্ধে? স্থানীয় লোকজন এবং তৃণমূলের একটা বড় অংশের বক্তব্য, সমস্ত সরকারি প্রকল্প থেকে কাটমানি নিতেন ভাইস চেয়ারম্যান। এক তৃণমূল নেতা কটাক্ষের সুরে বললেন, “দলের কর্মীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায় আর কন্ট্রাক্টরদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গলায় গলায়।” একই সঙ্গে শাসক নেতাদের একাংশের অভিযোগ, দলীয় কর্মী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুকুর-ছাগলের মতো ব্যবহার করতেন শান্তা। কয়েক মাস আগে পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাসকে থাপ্পড়ও মেরে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি।
তৃণমূল সূত্রে যেটা জানা যায় বেশ কয়েক মাস ধরে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভা এলাকায় বাড়ির প্ল্যান পাশ করার ব্যাপারে পৌরসভার চেয়ারম্যান ও সরকারী আধিকারিকদের সাথে ঝামেলা চলছিলো। এমনকি চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান এর সাথে এই ব্যাপারে তুমুল ঝামেলা সৃষ্টি হয়।
এলাকার সাধারণ মানুষের বক্তব্য বাড়ির প্ল্যান পাশ করার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের কাছে প্রচুর কাটমানি খেতেন শান্তা। এলাকার সাধারণ মানুষ ও তৃণমূল এর নিচু তলার কর্মীরা ভোটের আগে এই নিয়ে বারংবার অভিযোগ করে। এর পর রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়ে আজ রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা সরকার কে পদ থেকে সরিয়ে দেয়।