এক বয়স্ক রোগীর মৃত্যু আর সেই কারণে রোগীর বাড়ির ক্ষিপ্ত লোকজনের ডাক্তারদের ওপর হামলা, যার ফলে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন দুই জুনিয়র ডাক্তার, আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তাল গোটা বাংলা। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল থেকেই কর্মবিরতিতে চিকিৎসকেরা। আজও বাংলা জুড়ে সমস্ত সরকারি হাসপাতালে বন্ধ আউটডোর পরিষেবা। তালা ঝুলছে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগেও। তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর আপৎকালীন পরিষেবা চালু রাখার চেষ্টা করা হবে।
একই ছবি ধরা পড়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেও আউটডোর ও বিভিন্ন জরুরি পরিষেবা বন্ধ। হাসপাতালে আসা রোগীর পরিবারদের অভিযোগ, কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না তাঁরা। ডাক্তার কখন আসবে এ কথা জিজ্ঞাসা করায় হাসপাতাল থেকে উত্তর মিলছে, ‘আজ কোনও পরিষেবা দেওয়া হবে না।’ এ দিন সকাল থেকেই হাসপাতালের সামনে রোগীদের ভিড় জমতে থাকে। কেউ এসেছেন মুর্শিদাবাদ থেকে, কেউ বাঁকুড়া, কেউ মালদহ— রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এমন রোগীর সংখ্যা প্রচুর। বার বারই তাঁরা জানতে চাইছেন, এই সঙ্কট কখন কাটবে। কখন তাঁরা পরিষেবা পাবেন?
মঙ্গলবার তপসিয়ার এক বাসিন্দার মৃত্যু হয় হাসপাতালে। গোটা ঘটনার তদন্ত হবে একজন যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এনআরএসে জুনিয়র ডাক্তাররা ইমার্জেন্সির সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। হাসপাতালের দু’দিকের মূল গেট বন্ধ করে তালা লাগিয়ে শাট ডাউন পোস্টার দিয়ে দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ। বেলা বাড়লে এনআরএসে শামিল হন আর জি কর, এসএসকেএমের জুনিয়র ডাক্তাররাও। চিকিৎসক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের তরফে ডাঃ অর্জুন দাশগুপ্ত জানান, আজ, বুধবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ওপিডি পরিষেবা। মৃতের পরিবারের ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হল আদিল হারুন, নায়িম খান, মহম্মদ শাহনাওয়াজ আলম, মহম্মদ নিজামুদ্দিন, আফরোজ আলম।
শুধু এনআরএস নয়, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, সাগর দত্ত, মুর্শিদাবাদ, এসএসকেএম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল, কলকাতা মেডিক্যাল–সহ সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি করেন। কোথাও ধর্না, কোথাও মৌন মিছিল হয়। তাই সব মিলিয়ে গোটা বাংলার সমস্ত হাসপাতালেই চিত্রটা একই।