গত ২৩ মে ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, আসানসোল কেন্দ্রটি নিজেদের দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছে পদ্ম শিবির। কিন্তু এতে মোটেই দমে যায়নি রাজ্যের শাসক দল। বরং ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর বিধানসভায় ঘুরে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতাই এখন আসানসোল তৃণমূলকে অক্সিজেন জোগাচ্ছে। উল্লেখ্য, সেবারও লোকসভা ভােটে খনি অঞ্চলে রাজ্যের শাসক দলে ধস নেমে গিয়েছিল। কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৪২ হাজার, আবার কোথাও বা ২০ হাজারের বেশি ভোটে তারা পিছিয়ে পড়েছিল। কিন্তু তারপরই বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল চোখ ধাঁধানো ফলাফল করে। সেবার লোকসভা কেন্দ্রে বিজয়ী হওয়ার পরেও বিজেপি জেলার কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে খাতা খুলতে পারেনি। সেই স্মৃতি এখনও তাজা জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেবার পরাজয়ের পরও নেতাকর্মীরা হাল ছাড়েননি। তাঁরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিলেন। বিধায়করাও নিজেদের কেন্দ্রে আরও বেশি করে সময় দিতে থাকেন। পাশাপাশি, জেলাজুড়ে উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞও শুরু হয়। তার জেরেই আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয় মা-মাটি-মানুষের দল। আগের এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারও শাসক দলের দাপুটে নেতারা ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশল নিয়েছেন। তৃণমূলের এক নেতা যেমন বলছেন, ২০১৪ সালে কুলটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দল প্রায় ৪২ হাজার ভােটে পিছিয়ে পড়েছিল। আবার বিধানসভা নির্বাচনে আমরা ২০ হাজার ভোটে জয়ী হই। সুতরাং হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। এই লোকসভা কেন্দ্রে আমরা পরাজিত হলেও দলের ভোট বেড়েছে। সিপিএমের ভোটই বিজেপি এগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে আশা করা যায় বামেরা আর ওদের সমর্থন করবে না।
অন্যদিকে, তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তেওয়ারিও বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস দল ঘুরে দাঁড়াবেই। রাজ্য সরকার জেলার প্রতিটি প্রান্তে উন্নয়ন করেছে। তাই বিধানসভা নির্বাচনে জেলার বাসিন্দারা কেউ মুখ ফেরাবে না। তাঁর কথায়, লােকসভা ভোট বিভাজনের অ্যাজেন্ডায় হয়েছিল। কিন্তু বিধানসভায় তার প্রভাব পড়বে না। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপিতে যেভাবে বেনোজল ঢুকতে শুরু করেছে। সেটা তাদের পুরনো নেতা-কর্মীরা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। এভাবে চলতে থাকলে গেরুয়া শিবিরে বিদ্রোহের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠবে। তাছাড়া সিপিএম লোকসভায় বিজেপিকে ভোট দিলেও তারা এখন পার্টি অফিস খুলে সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে। সেটা হলে আগামী দিনে ভোট কাটাকাটিতে তৃণমূলেরই আখেরে লাভ হবে।