ফল প্রকাশের পরেই দিকে দিকে শুরু হয়েছে বিজেপির সন্ত্রাস। কিন্তু হিংসা-হানাহানির পথ কখনই পছন্দ নয় তৃণমূলের। তাই মমতা থেকে শুরু করে দেব-সকলেই বিশ্বাস করেন সৌজন্যের রাজনীতিতে। এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন মদন মিত্র। গতকাল উপনির্বাচনের ভোটযুদ্ধে পরাজিত হলেও সৌজন্য দেখালেন বিরোধী প্রার্থীকে। শুভেচ্ছা জানালেন অর্জুনকে। মদন জানালেন, পরাস্ত হলেও সবসময় মানুষের পাশে থাকবেন।
ভাটপাড়া যে আর প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রীর ‘কব্জায়’ থাকছে না, তা স্পষ্ট হতে শুরু করে বৃহস্পতিবার সকালে ভোট-বাক্স খোলার কিছু ক্ষণ পর থেকেই। তবে এ দিন আগাগোড়া ঠান্ডা মেজাজে ছিলেন মদন। এমনকি, চূড়ান্ত ফল জেনে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে শুভেচ্ছাও জানালেন প্রতিপক্ষকে।
সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ ব্যারাকপুরের রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের গণনা কেন্দ্রে পৌঁছে গিয়েছিলেন মদন। হলুদ পাঞ্জাবি, সাদা কুর্তা, পায়ে সবুজ হাওয়াই চটি। ডান হাতে দক্ষিণেশ্বরের প্রসাদী ওড়না জড়ানো। গণনা কেন্দ্রের বাইরে একটি বেঞ্চে বসে ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। মাঝেমধ্যে দলীয় কর্মীদের থেকে নিজের ও ব্যারাকপুর লোকসভার ফলাফল জানার মধ্যেই বললেন, ‘‘নির্বাচনের আগে থেকে শুরু করে ভোটের দিন, এমনকি এখনও সন্ত্রাস চালাচ্ছে বিজেপি। এত দিনে ভাটপাড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার বোমা পড়েছে।’’ ভোটের দিনই অভিযোগ উঠেছিল, বিভিন্ন রকমের অশান্তি পাকিয়ে মদনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালিয়েছেন অর্জুন সিংহ।
সেই সূত্র ধরেই এ দিনও মদনের অভিযোগ, ‘‘ওঁরা ছক কষে সন্ত্রাস চালিয়ে বিকেল ৩টে থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মুক্তাঞ্চল বানিয়ে নিয়েছিল। আমাদের তো কোনও ছক ছিল না। এত সন্ত্রাসের পরেও ভাটপাড়ার মানুষ আমার সঙ্গে ছিলেন। তাই আগামী দিনে আমিও তাঁদের সঙ্গে থাকব।’’ তিনি জানালেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য ‘ভাটপাড়া ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল’ তৈরি করবেন। কারণ পোড় খাওয়া ওই নেতা মনে করেন, ভোটে যিনি হারেন তাঁর যেমন নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে, তেমনই বিজয়ী প্রার্থীরও নৈতিক দায়িত্ব থাকে এলাকার মানুষের পাশে সব সময়ে থাকার, উন্নয়ন করার।