৩৪ বছরের বাম শাসনকালে নন্দীগ্রামকে বারবার ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হলেও, পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের বিষয়ে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করা হয়নি। এ রাজ্যে মা-মাটি-মানুষের সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই নোনা জলবেষ্টিত এই ভূখণ্ডে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জল প্রকল্প সংশ্লিষ্ট পাম্পিং স্টেশনের জমি মেলা নিয়ে প্রথমে কিছুটা জটিলতা থাকলেও, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে ও প্রচেষ্টায় স্থানীয় বাসিন্দারাই স্বেচ্ছায় জমি দান করে মিটিয়ে দিয়েছেন সেই সমস্যা। দেড় হাজার কোটি টাকার জল প্রকল্পকেই প্রচারে হাতিয়ার করছে তৃণমূল।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের প্রায় ১৪৮৮.৫ কোটি টাকায় তৈরি হবে এই প্রকল্প। এর ফলে প্রতিদিন মাথা পিছু ৭০ লিটার জল পাওয়া যাবে। এই প্রকল্পকে সামনে রেখেই চলবে প্রচার। এবার তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দিবেন্দ্যু অধিকারী। তিনি বলেছেন, “ নন্দীগ্রাম জল প্রকল্প মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এই প্রকল্পের মতই তমলুকে আরও বহু প্রকল্প রূপায়িত হয়েছে। এই সব কাজের সাফল্য আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরব”।
নন্দীগ্রাম, নন্দকুমার এবং চন্ডীপুর ব্লক এখন সরগরম এই জলপ্রকল্পের আলোচনায়। এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, “ জল প্রকল্প হলে আমাদের খুব উপকার হবে। জলের জন্যে হাহাকার থাকবেনা।” পানীয় জল মানুষের সাধারণ চাহিদা। তাই সেই চাহিদা পূরণ করার জন্যে মানুষ যে মমতার পাশেই থাকবেন তা স্পষ্ট।
রূপনারায়ণ নদ থেকে জল তুলে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে তা পরিশ্রুত করার পর রাখা হবে দু’টি গ্রাউন্ড লেভেল স্টোরেজ রিজার্ভারে। সেখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তা পৌঁছে যাবে নন্দীগ্রামের ঘরে ঘরে। আশা করা যায়, আগামী ২০২০ সালের মধ্যেই নন্দীগ্রামের প্রতিটি নাগরিকের জন্য দৈনিক ৭০ লিটার নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নপূরণ করা হবে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের (এডিবি) আর্থিক সাহায্যে গড়ে উঠছে নন্দীগ্রামের ১ ও ২ নম্বর ব্লকের জন্য মেগা জল প্রকল্পটি। উপকৃত হবেন প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ।