যত পড়ি ততই বড় অদ্ভুত লাগে আমার এই “বই” টাকে,চিনতে পারলেন না বোধ হয়। আরে Facebook,কম্পিউটার,মুঠোফোন,ল্যাপটপের এই যুগে দিনে রাতে অন্তত একবার যেখানে অনলাইন হতে না পারলে আমাদের পেটের ভাত হজম হয় না। কি কিছু ভুল বললাম কি?সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোনের ইন্টারনেটটা একবার অন করলেই হল।একটার পর একটা নোটিফিকেশন। টুঙটাং পুংপাং আরও হরেক রকম শব্দে লাইন দিয়ে ঢুকতে থাকে লাইক,কমেন্টস আর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। অনেক পুরোনো চেনা মুখগুলো ফুটে ওঠে এই বইয়ের পাতায়,ছবির নিচে ছোট্ট একটা কথা ইংরাজিতে লেখা “friend suggestion”,সেখানে mutual friends এর লিস্টে পরিচিত আরও অনেকজন।
এখান থেকে চেনা মানুষ গুলোর কাছে আবার নতুন করে বন্ধুত্বের বার্তা যায়।”সেই কত বছর আগে দেখা,কত্তো বদলে গেছিস রে তুই?কেমন আছিস?কি করছিস এখন?ফোন নং টা পাঠা তাড়াতাড়ি Facebook পুরনো সম্পর্ক গুলোকে আবার নতুন করে জোড়া লাগিয়ে দেয়।
কত নতুন মুখের ছবি আসে,পর পর সারি সারি।পছন্দ হলেই আঙ্গুলের সামান্য ছোঁয়ায় বন্ধুত্বের আর্জি পাঠানো যায়।দেশে-বিদেশে,জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে।মিত্রতার বিশ্বায়ন হয়তো বা একেই বলে।হতে পারে পরম আত্মীয়…বাবা মা,ভাই বোন,স্বামী স্ত্রী,কিংবা স্কুলের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক থেকে শুরু করে আরও অনেক জ্ঞানী গুণজন,Facebook এ সবাই কিন্তু সবাই কে “বন্ধু” নামেই চেনে।এখানে কিছু friend হয় যারা শুধুই friendlist থেকে যায়,হয়তো বা বছরে একদিন তাদের কাছে জন্মদিন অথবা বিবাহবার্ষিকীর শুভ কামনা যায়,তার থেকে বেশি কিছু নয়।আবার কোথাও সেই গভীর বন্ধুত্বের টানটা অনুভূত হয়।ছবির মালিকের সঙ্গে wavelength টা হয়ত ম্যাচ করে যায়।গল্প হয়,ঠাট্টা ইয়ার্কি হয় আবার মাঝে তর্ক বিতর্কও চলে।ম্যাসেজ্ঞারে কথা হয় “চলুন একদিন দেখা করি….কফি হাউসে বসে একটা আড্ডা হয়ে যাক”।
দিন চলে যায়;কর্মব্যাস্ত জীবনে দেখা করাটা আর হয়ে ওঠে না।ছবির বন্ধু ছবিতেই থেকে যায়;প্রোফাইল পিকচারে সময় তার ছাপ ফেলে।
অনলাইনে যোগাযোগটা কিন্তু চলতে থাকে,বন্ধুত্বটা বাড়তে থাকে।
Facebook এ শুধু friends হয় না,good friends ও হয়। কি বলেন বন্ধুরা?