সারা বছর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ১৯ টন আলু চাষ করেছিলেন আগ্রার কৃষক প্রদীপ শর্মা। কিন্তু সেই বিপুল পরিমাণ আলু বিক্রি করে তিনি কিনা হাতে পেলেন মাত্র ৪৯০ টাকা! সবই দেশের ‘কৃষকদরদী’ প্রধানমন্ত্রীর মোদীজির কল্যাণে। সেই টাকা তাই মোদীকেই পাঠিয়ে দিয়েছেন ক্ষুব্ধ প্রদীপ।
এই ধরনের ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়। গত ডিসেম্বরেই মহারাষ্ট্রের কৃষক সঞ্জয় শাঠে মোট ৭৫০ কুইন্টাল পেঁয়াজ বিক্রি করে উপার্জন করেছিলেন মাত্র ১,০৬৪ টাকা! প্রতি কেজি পেঁয়াজ বাবদ তাঁর আয় ছিল মাত্র ১ টাকা ৪০ পয়সা! সেসময় তিনিও রাগে-হতাশায় তাঁর উপার্জনের পুরো টাকাটাই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে মানি অর্ডার করে দেন।
একইসঙ্গে মোদী সরকারের ওপর নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ফলন ভাল হচ্ছে অথচ দাম পাচ্ছি না। আমরা কী পরিশ্রম করিনা? এই সামান্য টাকা দিয়ে কি করব? তাই প্রধানমন্ত্রীর বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে পুরো টাকাটাই মানি অর্ডার করে দিয়েছি। যার জন্য আমার আরও ৫৪ টাকা খরচ হয়েছে।’
অথচ কয়েক দিন আগে পর্যন্তও কৃষক কল্যাণে একাধিক বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়েছেন, কৃষকদের সুযোগ-সুবিধা তিনি নাকি বিশেষ ভাবে দেখবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তার উলট পুরাণ। যেখানে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা খরচ হয় এক কুইন্টাল আলু উৎপাদন করতেই, যেখানে ১৯ টন আলুর দাম মিলছে ৪৯০ টাকা! লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচটুকুও ওঠেনি প্রদীপের। এর থেকে বড় প্রহসন আর কী হতে পারে মোদীর ‘রামরাজত্বে’!
সূত্রের খবর, শুধু আগ্রাতেই ২.৮ লাখ হেক্টর জমিতে আড়াই লক্ষ কৃষক আলু চাষ করেছেন। এই যদি দামের অবস্থা হয়, তা হলে বাকি আলুচাষিদের যে কী অবস্থা হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গোটা বছর ধরে হাড়ভাঙা খাটুনির পর, তাঁদের কপালেও যে লোকসান ও হতাশা ছাড়া আর কিছুই জুটবে না, তা বলাই বাহুল্য।