অজানা রোগের প্রকোপ ও দূষণের গ্রাস থেকে বাংলাকে নিরাপদ রাখতে সবুজ বিপ্লব করবে রাজ্য। জানা গেছে, সেই লক্ষ্যে কলকাতা-সহ রাজ্যের সমস্ত পুর এলাকায় দ্রুতই সবুজের অভিযান শুরু করবে রাজ্য সরকার।
বিশ্ব উষ্ণায়ণের হাত থেকে বাঁচতে সম্প্রতি মুখ্যসচিব মলয় দে’র নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কীভাবে শহরের দূষণ কমানো যায়, সে জন্য ওই কমিটিকে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তারই অঙ্গ হিসাবে শহরাঞ্চলে ব্যাপক হারে বনসৃজনের পরিকল্পনা নিয়েছে বন দফতর।
বন দফতর সূত্রে জানা গেছে, শহরে সবুজের সমারোহ বাড়াতে পরিত্যক্ত জমিতে তৈরি হবে সবুজ উদ্যান। কোথাও আবার ব্লক প্ল্যান্টেশন, অ্যাভিনিউ প্ল্যান্টেশন, ট্রি পার্ক, কলোনি পার্কও বানানো হবে। এর পাশাপাশি জাতীয় সড়কের দু’পাশেও লাগানো হবে গাছ। কিন্তু শুধু লোক দেখানো বনসৃজন নয়, তাকে বাঁচিয়ে রাখতে গাছ পরিচর্যার ক্ষেত্রেও নজর দেবে দফতর। এর জন্য স্থানীয় মহিলাদের নিয়োগ করা হবে।
পরিকল্পনা অনুসারে, শহর এলাকায় একটুও জমি আর ফাঁকা পড়ে থাকবে না। শহরের সমস্ত অব্যবহৃত জমিতে বনসৃজনের উদ্যোগ নেবে রাজ্য বন দফতর। তাই পুরসভার অধীনে বন দফতরের যে সব ফাঁকা জমি রয়েছে, তার চারপাশে পাঁচিল তোলার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এ জন্য তৈরি হচ্ছে জমির তালিকাও। এছাড়া যে সব জমি বেদখল হয়ে গেছে, সেগুলিকে দখলমুক্ত করে তাতে নতুন করে বনসৃজন করা হবে বলে জানিয়েছে দফতর।
ইতিমধ্যেই শহর এলাকায় সবুজের অভিযান শুরু করার জন্য ডিএফওদের কাছ থেকে জরুরি ভিত্তিতে রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যের মুখ্য বনপাল এন কে পান্ডে। তাতে বেশ কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। যেমন, সংশ্লিষ্ট পুর এলাকায় কতটা এলাকা জুড়ে বনাঞ্চল রয়েছে। কতটা জায়গা বেদখল হয়ে গিয়েছে। ওই পুর এলাকায় কী ধরনের বনসৃজন করা যেতে পারে, তার সম্ভাব্য পরিকল্পনার কথাও জানাতে বলা হয়েছে ডিএফওদের।
বন দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, কলকাতা-সহ রাজ্যের অধিকাংশ পুর এলাকায় বনসৃজনের কাজ স্থানীয় পুরসভাগুলিই করে থাকে। ফি-বছর শহরে নিয়ম করে গাছ লাগানো হলেও তার সিংহভাগই বাঁচে না। বহু গাছ ঝড়ে উপড়ে যায়। তার উপর শহরে বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ কাজের জন্য সমানে বৃক্ষ নিধন চলছে। ফলে একদিকে শহরে যেমন সবুজের পরিমাণ কমছে। তেমনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উষ্ণায়ন। এর হাত থেকে রক্ষা পেতেই পুর এলাকাতেও বনসৃজনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে বন দফতরের হাতে।