আজ যেন সব হারানোর দিন। সকালেই প্রয়াত হয়েছেন প্রখ্যাত অভিনেতা গৌতম দে। আজ দুপুর ১.৪৫ নাগাদ সল্টলেকে নিজের বাড়িতেই প্রয়াত হলেন বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্য জনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি।
১৯৪৫ সালে প্রথম গান রেকর্ড করেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। গায়ক, সুরকার হিসেবে দীর্ঘ ছয় দশক ধরে সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দ্বিজেন বাবু। প্রায় ১৫০০ গান গেয়েছেন তিনি। তারমধ্যে প্রায় ৮০০ ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত।মহালয়ার সকালে অল ইন্ডিয়া রেডিও’তে মহিষাসুরমর্দিনীতে তাঁর গাওয়া ‘জাগো দুর্গা’ গানটি ছিল বিখ্যাত। মুম্বইয়ে সলিল চৌধুরী ও লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গেও কাজ করেছেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সপার্ট কমিটি ও সিলেকশন কমিটিতে ছিলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। অল ইন্ডিয়া রেডিও’র এক্সপার্ট কমিটিরও সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়াও সামলেছেন কলকাতার বাণীচক্র সঙ্গীত কলেজ-এর সভাপতি।
বহু বিখ্যাত গান উপহার দিয়েছেন তিনি তাঁর কণ্ঠের মাধ্যমে। তার কণ্ঠে জনপ্রিয়তা পাওয়া গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘আমার মাথা নত করে দাও হে’, ‘তুমি কেমন করে গান কর হে গুণী’, ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’, ‘শ্যামলবরণী ওগো কন্যা’, ‘ক্লান্তি নামে গো’ প্রভৃতি। দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে পেয়েছেন বহু পুরষ্কার। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকারের তরফে ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার’, ২০১০ সালেই ভারত সরকারের তরফে ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কার পান। ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কারে ভূষিত করেন।
শুক্রবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও খোঁজ নিয়েছিলেন তাঁর স্বাস্থ্যের। অবশেষে আজ যাবতীয় জাগতিক মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সঙ্গীত মহলে।