উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে গো-রক্ষকদের তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িত বিজেপি। পুলিশি তদন্তে উঠে এল এমনই তথ্য।
বুলন্দশহরের তাণ্ডবের ঘটনায় বিজেপি ছাড়াও বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং শিবসেনার কর্মীরাও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে মনে করছে প্রশাসন। কারণ, ধৃত মূল অভিযুক্ত যোগেশরাজ বুলন্দশহরে জেলা বজরং দলের নেতা এবং যুব বিজেপি মোর্চার সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করে তাকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত করেছে পুলিস। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই ওই দলগুলির কর্মী বলেই তদন্তকারীদের দাবি। এছাড়াও এফআইআরে পুলিশ যে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করেছে তার মধ্যে রয়েছে স্যানা এলাকার বিজেপি যুবনেতা শিখর আগরওয়াল এবং ভিএইচপি–র নেতা উপেন্দ্র রাঘবের নামও।
অবশ্য সিয়ানার নিউবংশ গ্রামের বাসিনদা যোগেশরাজের দাবি ছিল, মাহাও–এর বনে ঘোরার সময় ২৫টি গরুর দেহাবশেষ দেখতে পেয়ে সে এবং তার বন্ধুরা পুলিসে খবর দেয়। পুলিস পৌঁছলে পর সাম্প্রদায়িক গন্ডগোল শুরু হলে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, তাণ্ডবকারীদের অধিকাংশই বজরং দল, হিন্দু যুব বাহিনী এবং শিবসেনার মতো দক্ষিণপন্থী দলের সদস্য। ২৭ জনের নামে নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগের পাশাপাশি ৬০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধেও এফআইআর করেছে পুলিশ। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গোটা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুলন্দশহরের স্যানা মহকুমা এলাকায় মাহু গ্রামের বাইরে জঙ্গল লাগোয়া একটি মাঠে প্রায় ২৫টি গরুর মাংস পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরই প্রতিবাদে সকাল ১১টা নাগাদ ওই এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। ট্র্যাক্টর-ট্রলি ভরে ওই মাংস নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন কয়েকশো মানুষ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতারা। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অবরোধ ওঠানোর চেষ্টা হতেই উন্মত্ত জনতা-পুলিশে খন্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। জনতার ছোঁড়া পাথরের আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ইন্সপেক্টর সুবোধকুমার সিং। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তাতে এক গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর মিলেছে।