দুর্নীতি ও বিজেপি যেন ইদানীং পরস্পর সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে। তাই কেন্দ্র সরকারের যে কোনও প্রকল্প বা উদ্যোগের কথা শুনলেই এখন দুর্নীতির জুজু দেখছে বিরোধী দলগুলি থেকে শুরু করে দেশের মানুষ। এবার ক্ষুদ্র এবং মাঝারি মানের ব্যবসায় মাত্র ৫৯ মিনিটে ঋণদানের কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। ওই প্রকল্পটি আসলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বন্ধুদের পাইয়ে দেওয়ার কথা মাথায় রেখেই করেছেন বলে অভিযোগ রাহুল গান্ধীর দলের।
কংগ্রেসের অভিযোগ, যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই ঋণের আবেদন করতে হবে, সেটি বেসরকারি এবং মোদী ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদেরই। তাই সরকারি ঋণ দেওয়ার নামে আসলে কোটি কোটি টাকা লুঠের আয়োজন করা হয়েছে, এই অভিযোগ এনে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করা হয়েছে।
রবিবার এআইসিসিতে বিশেষ সাংবাদিক বৈঠকে দলের মুখপাত্র গৌরব বল্লভ এবং প্রণব ঝা জানিয়েছেন, মাত্র ৫৯ মিনিটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঋণ পাইয়ে দেওয়ার একটি ফাঁদ পেতেছেন মোদীজি। সিডবি অর্থাৎ স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে সাক্ষী রেখে এই ঋণ পাওয়ার জন্য যে ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে, সেটি বেসরকারি।
আমেদাবাদের একটি কোম্পানি ওই ওয়েবসাইটটি চালায় দাবি করে কংগ্রেস মুখপাত্রের অভিযোগ, যেসব ব্যক্তি ওই ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত তাদের প্রায় বেশিরভাগই ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাই রাফাল যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে যেভাবে অনিল আম্বানিকে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে, এখানেও তাই হচ্ছে।
গৌরব বল্লভ বলেন, এর আগে নোটবন্দি আর হুট করে চালু করা জিএসটির জেরে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি মানের ব্যবসাকে পথে বসিয়েছেন মোদীজি। আর এখন এমএসএমই অর্থাৎ মাইক্রো, স্মল, মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়ার জন্য মাত্র ৫৯ মিনিটে ঋণ প্রকল্প করছেন! আদতে ঋণ দানের নামে ওই ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত ডেটা বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, ঋণ পাওয়ার স্রেফ আবেদন করতেই ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন মূল্য জিএসটি সহ ১১৮০ টাকা। ঋণ পাবেন কি না, সেটা পরের ব্যাপার। কিন্তু তার আগেই রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ওই টাকা বেসরকারি কোম্পানির কাছে চলে যাচ্ছে। এটা দুর্নীতি ছাড়া আর কী?
কংগ্রেসের দাবি, সরকারি কাজ কেন বেসরকারি হাতে এভাবে দেওয়া হবে, কেনই বা আরবিআইয়ের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেসরকারি মাধ্যমে ঋণ দেওয়া হবে, তার তদন্ত হোক। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে শোরগোল তুলেছে বাকি বিরোধী দলগুলিও। যার ফলে লোকসভা ভোটের আগে, আরও খানিকটা মাথাব্যথা বাড়ল মোদী সরকারের।